মেয়ের ধর্ষণের ক্ষত মুছতে বাবার লড়াই

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ৪ কিলোমিটার। ৯ বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে রোজ ছোটেন। শরীরী অলসতা যেন তাঁর মেয়ের জীবনের জন্য ঝুঁকি হয়ে যেতে না পারে, তাই ঝাড়খণ্ডের হাতিপাতা গ্রামের সেই হতদরিদ্র বাবার কামাই নেই একদিনও।

পেটের ভাত দু-বেলা যে পরিবারে জোটে না, সেখানে একটা সাইকেল কেনা মানে তো বিলাসিতাই। সে ‘বিলাসিতা’ করার মতো অবস্থা নেই গরিব বাবার। কিন্তু, তাতে কী এল গেল! দারিদ্র্যকে মেয়ের চিকিত্‍সার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি।

দু-মাসে আগে এলাকার এক ড্রাইভার তাঁর মেয়েকে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর, নিঃশেষিত চায়ের ভাঁড়ের মতো ফেলে দিয়ে যায় রাস্তায়। যন্ত্রণাকাতর মুখে বাড়ি অবধি ফেরে মেয়েটি। তখনো অমানুষিক অত্যাচারে অনর্গল রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। মেয়েকে বাঁচাতে মরিয়া বাবা ছোটেন স্থানীয় হাসপাতালে।

কিন্তু সেই হাসপাতালের ডাক্তাররা পারেননি নাবালিকার গোপনাঙ্গের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে। তাঁরা শিশুটিকে রাঁচি হাসপাতাল পাঠিয়ে দেয়। সেখানে অস্ত্রোপচার। শেষমেশ ইনটেসটাইনই বাদ দিতে হয়। তারপর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয় শিশুটিকে। কিন্তু ড্রেসিং করাতে রোজ যেতে হয়।

‘সাইকেল বা মোটরবাইক যদি না থাকে, কী করব? ও তো আমার বাচ্চা। আমি তো ওকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলতে পারি না। আমি চাই, খুব তাড়াতাড়ি ও সুস্থ হয়ে উঠুক। তাই রোজ হাসপাতালে নিয়ে আসি।’ এক নিঃশ্বাসে বলে চলেন ওই নাবালিকার বাবা।

মেয়েকে রোজ রোজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে, কাজে ঘাটতি থাকছে। আর্থিক চাপও পড়ছে সংসারে। তারপরেও মেয়ের মুখে একচিলতে হাসির রেখা দেখে ভুলে যান সব কষ্ট।



মন্তব্য চালু নেই