মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের উদ্বোধন

পুনঃখনন শেষে মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথ (চ্যানেল) আজ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো।

বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে চ্যানেলটি উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে নতুন ১১টি ড্রেজার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী সব সময় ওই নৌ-চ্যালেনটি উন্মুক্ত রাখার নির্দেশ দেন।

এ সময় নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান গণভবনে এবং সচিব অশোক মাধব রায় ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক বাগেরহাট প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।

সমুদ্রপথে বিদেশ থেকে আমদানি করা মালামাল সমুদ্র উপকূল অতিক্রম করে অভ্যন্তরীণ নৌপথ দিয়ে দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলে পরিবহন এবং বাংলাদেশ-ভারত নৌ-প্রটোকল রুটে নৌযান চলাচলের জন্য মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নৌপরিবহন চ্যানেলের উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান নৌ-প্রটোকল চুক্তির আওতায় নৌযান চলাচল সহজ ও সুগম হবে। দেশের আমদানি-রপ্তানি এবং পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে প্রাণ ফিরবে।

এর আগে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথের দূরত্ব ৩১ কিলোমিটার। এর মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ ২৬ কিলোমিটার খনন করেছে। ড্রেজার দিয়ে ১৮১.৮০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে। ড্রেজিং করা অংশে পলি ভরাটের কারণে সংরক্ষণ খননের আওতায় ৬২.১২ লাখ ঘনমিটার পুনঃখনন করা হয়েছে। বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএর তিনটি ড্রেজার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি ড্রেজার সংরক্ষণ ড্রেজিংয়ে নিয়োজিত আছে।

পুনঃখনন করে নৌপথটি চালুর ফলে ৮১ কিলোমিটার দূরত্ব কমে গেছে। এ ছাড়া মোংলা-ঘষিয়াখালীর রমজানপুর এলাকায় একটি লুপ কাট করায় আরো পাঁচ কিলোমিটার দূরত্ব কমেছে।

২০১৪-১৫ সালে ১৮টি ড্রেজার ও ১৫টি এক্সকাভেটর দিয়ে পুনঃখনন করা হয়। অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (প্রথম পর্যায় ২৪টি নৌপথ) খনন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২-৭৪ সালে মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি খননের মাধ্যমে প্রথম উন্মুক্ত করেন। ১৯৮০ দশকে মোংলা-ঘষিয়াখালী সংযুক্ত খালগুলোর মুখ বন্ধ করে চিংড়ি চাষ ও বিভিন্ন পোল্ডার নির্মাণ করায় ভরাট প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০১ সালের পর থেকেই এ চ্যানেলের নাব্যতা সংকট শুরু হয় এবং ২০১০ সাল থেকে পুরোপুরি শুকিয়ে এটি বন্ধ হয়ে যায়।

নৌপথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুন্দরবনের ভেতরের নদী দিয়ে নৌযানগুলো চলাচল করতে থাকে। এতে সুন্দরবনের পরিবেশ সংকটাপন্ন হতে শুরু করে। সুন্দরবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পুনরায় ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে নৌপথটি খনন শুরু করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএর নবনির্মিত আটটিসহ মোট ১২টি ড্রেজার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছয়টি ড্রেজার ২০১৪ সালের জুনে নিয়োগ করে মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথটি পুনঃখনন শুরু করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই