মৌলভীবাজারে বিআরডিবি সকল কার্যক্রম স্থবির

মৌলভীবাজারে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কর্মচারীদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে বিআরডিবির আওতাভুক্ত সমিতিতে ৪১ লাখ টাকারও বেশি খেলাপি ঋণ আদায়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বরখাস্ত হওয়া একজন হিসাবরক্ষকের বিআরডিবি মৌলভীবাজার সদর কার্যালয়ে যোগদানের প্রতিবাদে মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীরা মে মাস থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন।

জানা গেছে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বিআরডিবির আওতাভুক্ত মূল প্রকল্পে ৬৪টি এবং সমন্বিত দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতে (সদাবিক) ১১টি সমিতি রয়েছে। এ ৭৫টি সমিতির সদস্যসংখ্যা প্রায় এক হাজার ৫৮০ জন। খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিআরডিবির পরিদর্শকরা জানান, শ্রীবাস চন্দ্র দাস একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে মৌলভীবাজারে কর্মরত থাকাকালে চেক ও স্বাক্ষর জালিয়াতি এবং প্রকল্পের উপকারভোগীদের টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ২০১২ সালের ২ জুলাই সাময়িক বরখাস্ত হন। নয় মাস বরখাস্ত থাকার পর তাকে ২০১৩ সালের ৭ মে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় স্বপদে বদলি করা হয়। এরপর তাকে রাজনগরে বদলি করা হয়। ২৫ মে রাজনগর থেকে মৌলভীবাজার সদর কার্যালয়ে হিসাবরক্ষক (মহিলা উন্নয়ন) পদে যোগদান করেন। এরপর থেকে কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়।

জানা যায়, তৎকালীন সময়ে শ্রীবাস চন্দ্র দাস বিআরডিবির কর্মচারী সংসদের (সিবিএ) সদস্য ছিলেন। সিবিএর কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে তিনি সে সময় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। বিআরডিবির ইউসিসিএ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার পরিদর্শক অনিল চন্দ্র দাশ জানান, মাঠে সমিতির সদস্যরা পূর্বের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে চায় না। শ্রীবাস চন্দ্র দাস মৌলভীবাজারে যোগ দেয়ায় মাঠে এ সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। তাই কর্মচারীরা মাঠে কাজ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। শ্রীবাস চন্দ্র দাস একজন দুর্নীতিবাজ হিসাব রক্ষক যা তার কাগজপত্র দেখলে সহজেই প্রমান হবে। তাকে সদর থেকে বদলি না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

বিআরডিবি মৌলভীবাজার সদরের ইউসিসিএ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম জানান, আগেও শ্রীবাস চন্দ্র দাস এখানে ছিলেন। সে সময় বহু আর্থিক কেলেংকারি করেছেন। বরখাস্ত হয়েছেন। আবার কীভাবে চাকরি ফিরে পেয়ে মৌলভীবাজারে যোগ দিয়েছেন তা বোধগম্য নয়। লোকটি এখানে আসায় সমিতিগুলোতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। কর্মচারীরা কাজ করছেন না। বিষয়টি বিআরডিবির ডিজি বরাবরে জানানো হয়েছে। বিআরডিবি মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক বুরহান উদ্দিন বলেন, শ্রীবাসের বদলির দাবিতে কর্মচারীরা কাজ করছেন না। সমস্যা কিছুটা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই একটা সমাধান হবে।

কর্মবিরতি ও অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্রীবাস চন্দ্র দাস মোবাইলফোনে বলেন, বিআরডিবির সদর অফিসে তাকে নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কর্মচারীরা তার যোগদানের পর থেকে নিয়মিতভাবে কাজ করছেন। গতমাসে তারা (কর্মচারীরা) বেতন-ভাতা নিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন।



মন্তব্য চালু নেই