ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াই চলছে লোক দেখানো উচ্ছেদ অভিযান (ভিডিও)

টিপু সুলতান (রবিন), সাভার থেকে: সাভারে মহাসড়ক ও ফুটপাত দখল করে নির্মিত অবৈধ দোকানপাট ও বাজার উচ্ছেদে লোক দেখানো অভিযান চালিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। বুধবার সকাল ১০ টা থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ছাড়াই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর বাসষ্ট্যান্ডে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

এসময় মহাসড়কের পাশে নির্মিত কাঁচা বাজারটির আংশিক উচ্ছেদে করা হলেও পরক্ষনেই সওজ কর্মকর্তাদের সামনে ব্যবসায়ীরা মহাসড়কের উপর বাজার বসিয়ে কেনা-বেচা শুরু করে। আর সবকিছু চোখের সামনে ঘটলেও দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের যেন বিষয়টি চোখে পড়ছেনা।

এছাড়া মহাসড়েকের পাকা অংশের উপর নির্মিত কিছু ভাসমান দোকানপাট উচ্ছেদ করা হলেও পাশেই ইট-পাথর দিয়ে নির্মিত ভবনগুলো ঠায় দাড়িয়ে রয়েছে। সেগুলো উচ্ছেদে কোন ব্যবস্থা নেয়ার তৎপরতা দেখা যায়নি সড়ক ও সওজের কর্মকর্তাদেরকে।

001

সরেজমিনে হেমায়েতপুর বাসষ্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের পশ্চিম পাশে নোংরা-আবর্জনা পরিবেষ্টিত কিছু কাঁচামালের দোকান সড়িয়ে পরিস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু পাশেই ফুটপাত ও সওজের জমিতে মাথা উচু করে দাড়িয়ে রয়েছে হোটেল, চায়ের দোকান, স্যানিটারী দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের পাঁকা বাজার। এছাড়া কবির হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী মহাসড়কের উপর ইট রেখে ওই বাজারের উন্নয়ন কাজ করলেও সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি সওজ।

সওজের জমির সীমানা জানতে চাইলে দুলাল চৌধুরী নামে সওজের একজন কর্মকর্তা জানান, পাঁকা বাজারটির পেছনে নির্মিত বহুতল ভবনগুলোরও ২০ ফিট পড়েছে সরকারী জায়গার ভিতরে। কিন্তু প্রসাশনের সঠিক নজরদারী ও সাহসী পদক্ষেপের অভাবে দিনের পর দিন স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র এসব জায়গায় পাঁকা মার্কেট নির্মান করে রেখেছে। এর প্রতিটি দোকান অগ্রীম টাকা নিয়ে দৈনিক ও মাসিক ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

সওজের জমিতে নির্মিত মার্কেটের আদি ঢাকা বিরিয়ানী হাউজের ম্যানেজার জানান, কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে তিন লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাড়ায় দোকানটি পরিচালিত হচ্ছে। একই রকম কথা জানালেন চার দোকানী তোফাজ্জল হোসেন।

002

কয়েকটি টুকরি নিয়ে মহাসড়কের উপর বসা সাইদুর জানালেন ৪ হাজার টাকা অগ্রীম দিয়ে দুই হাত জায়গার পজিশন নিয়েছেন তিনি। প্রতিদিন পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদেরকে দুই’শ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। বিশেষ দিনে মাঝে মধ্যে দোকান উঠিয়ে দিলেও ভাড়া চালিয়ে যেতে হয়। তা না হলে পড়ে আর পজিশন পাওয়া যায়না।

ম্যাজিষ্ট্রেট ছাড়া উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ সামসুজ্জোহ বলেন, ডিসি অফিস থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ যুবায়েরকে উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দিতে বলা হয়েছে। কাজের চাপ থাকায় তিনি এখানে আসতে পারেনি তবে প্রয়োজন হলে তাকে ডেকে নেয়া যাবে।

003

এছাড়া পাঁকা স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে তিনি বলেন, দখলকারীদেরকে নোটিশ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। তবে প্রশাসনের সহযোগীতা ও লোকবল না থাকায় উচ্ছেদ অভিযান ত্বরান্বিতত করা যাচ্ছেনা বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে সড়ক ও জনপথের এ উচ্ছেদ অভিযানকে লোক দেখানো বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সাধারন মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মজীবি লোক জানান, মহাসড়কের উপর বাজার ও বেবী স্ট্যান্ড নির্মান করায় আমাদের চলাচলে খুব কষ্ট হয়। গাড়িগুলো পুরো সড়ক দখল করে রাখায় শান্তিমতো হাটাও যায়না। প্রভাবশালীদেরকে যায়গার ভাড়া দেয় বলে কাউকে কিছু বলতে গেলে উল্টো বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে ভূমিদস্যু ও রাস্তা দখল কারীদেরকে বিষয়ে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর নজরদারীসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান ভুক্তভোগী সাধারন মানুষ।

ভিডিওটি দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন:

ভিডিও- ১ : এখানে ক্লিক করুন


ভিডিও- ২ : এখানে ক্লিক করুন



মন্তব্য চালু নেই