যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটে বাংলাটাউন!

পৃথিবীর সব জাতিই চায় তারা যেন নিজের দেশের বাইরেও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সবাই যেন তাদের নাম জানে, তাদের কাজের স্বীকৃতি দেয়। বাঙালী জাতিও এর ব্যতিক্রম না। যুক্তরাষ্ট্রে চায়নাটাউন কিম্বা মেক্সিকোটাউনের নাম আগে অনেকে শুনে থাকলেও বাংলা টাউনের নাম কেউ শোনেনি। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েটে সম্প্রতি পত্তন করা হয়েছে বাংলাটাউন।

‘মিশিগান রাজ্যের ডেট্রয়েট এবং হ্যামট্র্যাক শহরে গেলে একটু চমকে যেতে হবে কারন শহর জুড়ে চলছে বাংলাদেশী রিক্সা! সেখানে বসবাসরত প্রচুর বাঙালী এমনকি অন্য আরো অনেক দেশের পর্যটকরা উৎসাহ নিয়ে সেই রিক্সায় চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছড়ানো বিভিন্ন বাঙালী রেস্তোরাঁয় এবং সুপারশপে!’- অন্তত এই রকম দৃশ্যেরই কল্পনা করতে শুরু করেছেন ডেট্রয়েটের বাঙ্গালী নেতারা। কারন শহরের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই হচ্ছে বাঙালী। আরও চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে সেখানে নেতৃত্ত দিচ্ছে বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি হ্যামট্র্যাক সিটি কাউন্সিল পদপ্রার্থী সাদ আলমাস এই প্রথম দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন কাউন্সিলম্যান রবার্ট জোলাক’কে পরাজিত করেছে। এই প্রথম বাংলাদেশি নেতৃত্তে চলছে হ্যামট্র্যাক শহর। যে শহর চালাচ্ছে বাঙালীরা তার নাম বাংলাটাউন হবে না কেন?

মিশিগানের গভর্নর রিক স্নাইডার সম্প্রতি হ্যামট্র্যাক শহর পরিদর্শনে করেছেন। সেখানে বাঙালী আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লাল ফিতা কেটে হ্যামট্র্যাক শহরের উত্তর সীমানাকে তিনি বাংলাটাউন হিসাবে চিহ্নিত করেন। তবে ফিতা কাটার পূর্বে তিনি মার্কিন-বাংলাদেশি পাবলিক এফেয়ার কমিটির অফিসে বসে পুরোদস্তর বাঙালী নাস্তা খান। নাস্তায় তাকে খেতে দেয়া হয় গরুর মাংস দিয়ে বানানো পেস্ট্রি এবং গরম চা।

মার্কিন-বাংলাদেশি পাবলিক এফেয়ার কমিটি বাংলাদেশি অভিবাসীদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। এই নাম পত্তনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রকরে সেখানে শত শত বাঙালীর সমাগম হয়।

মার্কিন-বাংলাদেশি পাবলিক এফেয়ার কমিটি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এহসান তাকবিম এ ব্যাপারে অত্যন্ত আশবাদী যে, বাংলা টাউন খুব শিগগিরি বাঙালীদের জন্য পরিণত হবে ডেট্রয়েটের নামকরা মেক্সিকো টাউনের মতই জাতি সমৃদ্ধির জায়গা।

উল্লেখ্য যে, হ্যামট্র্যাক শহর একসময় পরিচিত ছিল পোলিশ(পোল্যান্ডের নাগরিক) অভিবাসীদের আবাসস্থল হিসাবে। যদিও সেখানে পোলিশ জনগনের সংখ্যা এখন অনেক কমে গেছে। ১৯৯০ সালে হ্যামট্র্যাকের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ ছিল যেখানে ছিল পোলিশ, এখন সেখানে আছে মাত্র ১৫ শতাংশ।

এহসান তাকবিম এর মতে, গোটা মিশিগান রাজ্য জুড়ে এখন প্রায় ৪০ হাজার এবং ডেট্রয়েট-হ্যামট্র্যাক এই দুই শহর জুড়ে প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশি আমেরিকান বসবাস করছে। বাংলাটাউন প্রতিষ্ঠার কারনে সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটি এখন আনন্দে মশগুল। অনেকের
মতে এটাই সেখানকার প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সিটি কাউন্সিল।



মন্তব্য চালু নেই