যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কমেছে বাংলাদেশি পোশাকের দাম

পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ, কারখানার উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সিন্ডিকেট বায়ারদের কারণে গত ১৪ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাম ৪০ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমেছে।

বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ ভবনে ‘বস্ত্র খাতের উন্নয়ন ও মূল্য বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পেন ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মার্ক অ্যানার এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

এতে মার্ক অ্যানার জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত ১৪ বছরে (২০০০-২০১৪) তৈরি পোশাকের রফতানি মূল্য কমেছে ৪০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ, কারখানার উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শ্রমিকের যথাযথ মজুরী ব্যবস্থাপনাসহ নানা নেতিবাচক ধারনা ও সিন্ডিকেট বায়ারদের কারণে দাম কমেছে। আর এর প্রভাব পড়ছে উৎপাদনকারী এবং সরবরাহকারী দেশগুলোতে।

পোশাকের এ দরপতন ঠেকাতে বিদেশী ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে উৎপাদনকারীদেরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে; যাতে একটি নির্দিষ্ট দরের কমে কেউ পোশাক রফতানি না করে। এ ছাড়া তৈরি পোশাকের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য একটা নির্দিষ্ট রপ্তানী মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক পণ্যের যথাযথ মূল্য নিশ্চিত করতে উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বলগুলোকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। আর বায়ারদের আধিপত্য কমাতে নিজ নিজ দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা পরিষদের সিনিয়র গবেষক নাজনীন আহমেদ বলেন, বায়ারদের আধিপত্য কমাতে তাদের দেশের সরকারকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু করার আছে। পণ্যের যথাযথ দাম দিতে ক্রেতাদের উৎসাহিত করার দরকার আছে।

সিপিডির রিসার্চ ফেলো খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পণ্যের দাম কমে যাওয়াটা বড় ইস্যু। এতে উৎপাদকদের লাভ কমছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইলরা কতটুকু নৈতিকভাবে ব্যবসা করছে তা খতিয়ে খেতে হবে। সবার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য লাভের সুষম বন্টনের প্রস্তাব দেন তিনি।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, তেল সমৃদ্ধরাষ্ট্রপুঞ্জের জোট ওপেকের আদলে তৈরি পোশাক ক্রিয়কারী দেশগুলোকে নিয়ে একটি জোট গঠন করা দরকার। তবে তেল এবং গার্মেন্ট পণ্য সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায় জোট কতটুকু কার্যকরি হবে তাও ভেবে দেখা প্রয়োজন।



মন্তব্য চালু নেই