যেখানে পরাজিত ওবামা

বারাক ওবামা। বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তিনি। ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভ করে বিশ্বের ইতিহাস নতুন করে লিখেছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে স্মরণীয় ঘটনার একটি ছিল এটি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে অনেক কিছুই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। পূরণও করেছেন অনেক প্রতিশ্রুতি। আবার কিছু বিষয়ে তার ব্যর্থতাও রয়েছে।

ওই ব্যর্থতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি মালিকানাধীন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ‘কমন সেন্স গান সেফটি লজ’ নামে একটি আইন পাস না করতে পারা অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত বন্দুকের মাধ্যমে প্রাণহানির ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সব হত্যাকাণ্ড রুখতে ব্যক্তি মালিকানাধীন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আইন তৈরিতে উদ্যেগী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এতে সফল হননি। এ বিষয়টিকে নিজের শাসনামলের সবচেয়ে হতাশাজনক/পরাজিত অধ্যায় হিসেবে স্বীকার করেছেন ওবামা।

বাবার দেশ কেনিয়ায় যাওয়ার প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার বিবিসির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ওবামা ব্যক্তিগত অস্ত্রের মাধ্যমে পর পর বেশ কিছু নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরও এ আইন পাশের ব্যর্থতাকে ‘পীড়াদায়ক’ বলে উল্লেখ করেন। তবে ওবামা এও বলেছেন, আইনটি পাসে তিনি তার চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। এটা পাস হওয়া জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ সাক্ষাৎকার নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে সিনেমা হলে এক বন্দুকধারীর হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন।

দীর্ঘ এ সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের থাকা না থাকা নিয়ে কথা বলেছেন। ওবামা মনে করেন, যুক্তরাজ্য যদি বিশ্বে তাদের প্রভাব বজায় রাখতে চায়, তাহলে তাদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করা ঠিক হবে না। বরং যুক্তরাজ্য ইউনিয়নে থাকলে তা ইউনিয়নকেও শক্তিশালী করবে বলেই তিনি মনে করেন।

ওবামা বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি প্রতিষ্ঠান বিশ্বকে নিরাপদ আর উন্নত করে তুলছে। এ রকম একটি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের অবদান রাখার জন্যই যুক্তরাজ্যের উচিত সেখানে থাকা।’ ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে ২০১৭ সালে ব্রিটেনে গণভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি মার্কিন কংগ্রেসে (পার্লামেন্ট) পাস হবে বলেও আশা করেন তিনি। ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পরাজিত করতে সিরিয়ায় একটি রাজনৈতিক সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর শুক্রবার কেনিয়ায় প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন ওবামা। সাক্ষাৎকারে কেনিয়ার দুর্নীতি ও মানবাধিকারের লঙ্ঘনকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন তিনি। সমাকামীদের অধিকারের পক্ষে নিজের অবস্থানকে যুক্তিসঙ্গত মনে করেন তিনি।

তথ্যসূত্র : বিবিসি



মন্তব্য চালু নেই