যেদিকেই তাকাবেন শুধু সাপ আর সাপ, একসঙ্গে এত সাপ পৃথিবীর আর কোথাও নেই (ভিডিও)

প্রকৃতির নিয়ম মেনে এপ্রিলের শেষ আর মের শুরুর দিকে যখন বরফ গলা শুরু হয়, তখন সাপেরা গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে আসে। আর সাপের সংখ্যাটি কিন্তু এক বা দুইশো নয়, প্রায় ৭০-৮০ হাজার সাপ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। যেদিকেই তাকাবেন শুধু সাপ আর সাপ।

বলছিলাম কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশের নার্সিজে এলাকার কথা। সেখানে গেলে অতি দুঃসাহসী লোকও আঁতকে উঠতে পারে। এক জায়গায় একসঙ্গে এত সাপের দেখা পৃথিবীর আর কোথাও মিলবে কি না সন্দেহ।

রেড সাইডেড গার্টার নামে বিশেষ এক জাতের সাপ এখানকার পুরো এলাকার গর্তগুলোতে কিলবিল করছে। শীতে এখানকার পাথুরে এলাকার গর্তের ভেতর সাপগুলো শীতনিদ্রায় থাকে। কোনো কোনো গর্তে তো একসঙ্গে ৩৫ হাজার সাপও দেখা যায় কখনো কখনো। গ্রীষ্মকাল সাপগুলোর প্রজননেরও মৌসুম। গ্রীষ্মের শেষে সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে শীত শুরু হওয়ার সময় আবার সাপগুলো গর্তে ফিরে যাওয়া শুরু করে।

102-snakes-found-in-home

 

মজার ব্যাপার হলো, সাপের মতো এমন ভয়ংকর বস্তু দেখার জন্য এখানে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রোজ প্রচুর দর্শনার্থীর আগমনও ঘটে। দর্শনার্থীদের সাপ দেখার সঙ্গে সঙ্গে মাঝেমধ্যে হাত দিয়ে ধরারও সুযোগ থাকে। রেড সাইডেড গার্টার বিষাক্ত সাপ নয়। অবশ্য কখনো কখনো রেগে গেলে বাজে গন্ধযুক্ত এক ধরনের তরল পদার্থ গা থেকে ছিটিয়ে দেয়।

5701536808_f402c4a1fd_b

তবে সব সময় সাপ দেখার সৌভাগ্য হয় না। যখন সাপগুলো গর্ত ছেড়ে বের হয়ে আসে, কেবল সে দু-তিন মাসজুড়েই সাপগুলো দেখা যায়। তখন রোজ তিন-চার হাজার দর্শনার্থী এসে জড়ো হয় সাপ দেখার জন্য। বাকি প্রায় আট-নয় মাস সাপগুলো শীতের হাত থেকে বাঁচতে গর্তেই ঢুকে থাকে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাওয়ায় সাপগুলো মাটির অনেক ভেতরে নিজেদের জায়গা করে নেয়, যাতে বরফের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। সঙ্গে করে নিয়ে যায় ব্যাঙ আর পোকামাকড়ের বিশাল ভাণ্ডার, যাতে আরামে শীতটা পার করা যায়।

narcisse-snake-pits-1[6]

১৯৯৯ সালে ম্যানিটোবার আবহাওয়া অতিরিক্ত খারাপ হয়ে পড়ায় হাজারখানেক সাপ মারা পড়ে। এ ছাড়া প্রতিবছরই মহাসড়কে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে প্রচুর সাপের মৃত্যু হয়। অবশ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করার পর সাপের মৃত্যুহার এখন অনেক কম। রাস্তার ধারে বড় করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে গাড়িচালকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, যেন সাপের গায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে না যায়। রাস্তার নিচ দিয়ে পাইপ বানিয়ে রাখা আছে, যাতে সাপেরা ওপর দিয়ে না গিয়ে পাইপ দিয়ে নিরাপদে চলতে পারে।

ভিডিও:

সূত্র: বেঙ্গলী নিউজ



মন্তব্য চালু নেই