যেভাবে অভিনয়ে এলেন তারা

প্রিয় তারকাদের নিয়ে ভক্তদের আগ্রহের শেষ নেই। তাই তাদের নানা বিষয় নিয়ে ভক্তদের কৌতূহল রয়েছে। তবে প্রশ্নের মুখোমুখি হলে অনেক সময়ই তারকাদের মুখ থেকে তাদের জীবনের বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। কারো কারো মুখে শোনা যায় অডিশনের গল্প, আবার কারো কারো মুখে শোনা যায় নিজেকে তৈরি করার গল্প।

বলিউড সিনেমায় অনেক জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী রয়েছেন, যারা অপ্রত্যাশিতভাবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে নিজেদের প্রমাণ করে শক্ত আসন গড়ে নেন। বলিউডের জনপ্রিয় অনেক তারকা রয়েছেন যারা ভাগ্যবলে কিংবা অপ্রত্যাশিতভাবে সিনেমায় অভিষেক হয়। অভিনয়ে আসার এসব গল্প তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শেয়ার করেছিলেন। বলিউডের এমন পাঁচ তারকার অভিনয়ে আসার গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।

মাধুরী দীক্ষিত : বলিউড সিনেমায় ধাক-ধাক তারকা হিসেবে সুপরিচিত মাধুরী দীক্ষিত। তবে অভিষেকের আগে সিনেমায় অভিনয়ের কোন লক্ষ্যই ছিল না তার। মাধুরীর অভিষেক ঘটে ১৯৮৪ সালে ‘আবোধ’ সিনেমার মাধ্যমে। কিন্তু এই সিনেমায় ডাক পাওয়া তার জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। মাধুরীর বান্ধবীর বাবা গোবিন্দ। তিনি রাজশ্রী প্রোডাকশনে কর্মকর্তা ছিলেন। নাচে মাধুরীর দক্ষতা সম্পর্কে তিনি আগে থেকেই জানতেন। ১৯৮৪ সালে রাজশ্রী প্রোডাকশন নতুন সিনেমার কাজে শুরু করে। এবং ঘোষণা দেয় তারা নতুন মুখ খোঁজছে। সেই সূত্র ধরে গোবিন্দ মাধুরীকে বলেছিলেন সিনেমায় কাজ করতে। আর এভাবেই বলিউডে অভিষেক ঘটে মাধুরীর।

প্রীতি জিনতা : ১৯৯৮ সালে বলিউডে প্রীতির অভিষেক ঘটে ‘দিল সে’ সিনেমার মাধ্যমে। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছিলেন মোট চারজন। তাদের মধ্যে শেখর কাপুরও ছিলেন। সিনেমায় যুক্ত হওয়ার আগে থেকেই শেখর কাপুর প্রীতির খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। একবার প্রীতি-শেখর যখন আড্ডা দিচ্ছিলেন তখন সিনেমাটির কথা উঠে। তখন শেখর তাকে অডিশনে দিতে বলেছিলেন। এক প্রকার বন্ধুর ইচ্ছাতেই অডিশনে গিয়েছিলেন প্রীতি। সিনেমার জন্য মনোনীত হওয়ার পরও তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না যে, তার কি করা উচিত। তারপর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে টস করতে উদ্যত হন। ভাগ্যক্রমে টসে জিতে যান এবং অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর ‘দিল সে’ সিনেমায় মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শাহরুখ খান এবং মনীষা কৈরালা।

রণভীর সিং : ২০১০ সালের প্রথম দিকেবলিউডের কাস্টিং ডিরেক্টর শানু শর্মার বাসায় একটি গানের আসর বসেছিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আদিত্য চোপড়া। শানুর পরিচিত হওয়ায় রণভীরও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে রাম-লক্ষণ সিনেমার ‘মাই নেম ইজ লক্ষণ’ গানটি চালানো হয়। এতে নেচে নেচে অভিনয় করতে বলা হয়েছিল রণভীরকে। আর তাতে তিনি বেশ দক্ষতার পরিচয় দেখিয়েছিলেন। এখান থেকেই আদিত্যর নজরে পড়েন রণভীর। ওই বছরই ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমার মাধ্যমে সিনেমায় রণভীরের অভিষেক ঘটে। চলতি বছর মুক্তি পেয়েছে রণভীর অভিনীত ‘বাজিরাও মাস্তানি’ সিনেমাটি। এ সিনেমার জন্য ৬১তম ফিল্মফেয়ার আসরে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেন তিনি।

পরিনীতি চোপড়া : একাধারে বিজনেস, ফাইন্যান্স এবং ইকনোমিক্সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে ইয়েশ রাজ ফিল্ম হাউজে পাবলিক রিলেশান কনসালটেন্ট হিসেবে যোগদান করেন পরিনীতি। আর এতেই তার ভাগ্য খুলে যায়। যদিও তার অভিনয়ের প্রতি দুর্বলতা আগে থেকেই ছিল। ছাত্রজীবনে থিয়েটারেও কাজ করতেন তিনি। আর সে ইচ্ছা পূর্ণতা পায় ইয়েশ রাজ ফিল্মে চাকরি করতে এসে। তারপর অভিনয়ের ডাক পান তিনি। ২০১১ সালে তার অভিষেক ঘটে ‘লেডিস ভার্সেস রিকি ভেইল’ সিনেমার মাধ্যমে। বর্তমানে তিনি ‘মেরি পেয়ারি বিন্দু’ সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে তার বিপরীতে দেখা যাবে অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানাকে।

ভূমি পেডনেকার : গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘দম লাগা কে হায়সা’র জন্য এ বছর সেরা অভিষেক অভিনেত্রীর খেতাব পেয়েছেন ভূমি। এই সিনেমায় অভিনয় করা ভূমির জন্য সত্যি অপ্রত্যাশিত। কারণ ছয় বছর ধরে তিনি ইয়েশ রাজ ফিল্মের সহকারী কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। কিন্তু কখনোই ভাবেননি তিনি অভিনেত্রী হবেন। ‘দম লাগা কে হায়সা’র স্ক্রিপ্ট তৈরি হওয়ার পর নতুন মুখ খোঁজছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। আর এর মধ্যে ভূমি স্ক্রিপ্ট পড়ে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন। কারণ নতুন যাকে নির্বাচন করা হবে তাকে তো তারই তালিম দিতে হবে। আর এই কাজটি তিনি ছয় বছর ধরে করে আসছিলেন। কিন্তু ভূমির স্ক্রিপ্ট পড়া দেখে প্রধান কাস্টিং ডিরেক্টরের মনে হয় যে, এই সিনেমায় ভূমি সবচেয়ে ভালো করবেন, এ কথা তিনি প্রযোজককে জানান। এ ভাবেই সিনেমায় অভিষেক ঘটে ভূমির। তবে সিনেমাটিতে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।



মন্তব্য চালু নেই