যেভাবে অভিযান চালানো হলো ‘জঙ্গি আস্তানায়’

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের এ ব্লকের নয় নম্বর সড়ক। এই সড়কেই অবস্থিত একটি ছয়তলা ভবনে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে বিকাল পর্যন্ত অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযোগ, এই ভবনে আস্তানা গেড়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, ‘সুইসাইডাল বেল্ট’সহ ৭ জেএমবি সদস্যকে আটক করে।

আগের আটক জেএমবি সদস্যের কাছে পুলিশ জানতে পারে, ওই বাসায় জেএমবির সদস্যরা গ্রেনেড করে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই ওই ভবন এবং এর আশপাশে নজরদারি শুরু হয়।

এর আগেই আশপাশের সব বাড়ির মালিককে জানিয়ে দেওয়া হয়, যেন নির্দেশ ছাড়া কেউ যেন বাইরে বের না হয়। এরপর পুরো ৯ নম্বর রোড ব্লক করে দেওয়া হয়।

রাত ২টার দিকে ওই ভবনের বাইরে অবস্থান নেয় এবং ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। এসময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি সদস্যরা।

রাতেই পুলিশ জেএমবি সদস্যদের পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটে ঢুকতে গিয়েও ঢুকতে পারেনি। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে নিরাপত্তার স্বার্থে ভবনের অন্য বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার হয়।

কয়েক দফা চেষ্টার পর সকালে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করা হয়। এ সময় দুটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ করা হয় এবং ভবনটি উড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও ভেতরে অবস্থান নেওয়া জঙ্গিরা হুমকি দেয়। পুলিশও পাল্টা গুলি করে।

দুই ফ্ল্যাটের বাথরুম, রান্নাঘর, ট্রাঙ্কসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি গ্রেনেড ভর্তি একটি বস্তা, ফেলে রাখা একটি গ্রেনেড, একটি পাইপ বোমা ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। যে পরিমাণ বিস্ফোরক পাওয়া গেছে, তা দিয়ে কমপক্ষে দুইশ’ গ্রেনেড বানানো সম্ভব বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি ট্রাঙ্ক, দুটি কম্পিউটার ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামও পাওয়া যায়।

গ্রেনেড ও বোমাগুলো পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা উত্তর বিসিল সারেং বাড়ি মাজার সংলগ্ন একটি খালি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেগুলো ধ্বংস করেন।

অভিযানে ৭ জন জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

অভিযানে অংশ নেয় গোয়েন্দা পুলিশ, পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াত এবং র‌্যাব।

১৪ ঘণ্টা পর বিকাল চারটার দিকে অভিযান শেষ হয়। ওই ভবনের অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা ফিরে যান নিজ ফ্ল্যাটে।



মন্তব্য চালু নেই