যেসব কারণে স্মার্টফোনে আগুন ধরে

স্যামসাং কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি তাদের নতুন গ্যালাক্সি নোট ৭ স্মার্টফোন বাজার থেকে তুলে নিয়েছে ব্যাটারি সমস্যার দরুন। তাদের কিছু গ্যালাক্সি নোট ৭ এর ব্যাটারিতে আগুন ধরে যাওয়ায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি নিয়ে। কী কারণে এতো নামি দামী ফোনের ব্যাটারিতেও আগুন ধরে যায়?

কিছুদিন আগে আইফোন নিয়ে বাইক চালানোর সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয় জনৈক ব্যক্তি। তিনি যখন বাইক থেকে পরে যান তখন তার প্যান্টের পকেটে থাকা আইফোনের ব্যাটারি বিস্ফোরণ হয়ে ধরে যায় আগুন! এবং তার পায়ের বেশ কিছু অংশ পুড়ে যায়। তখন থেকেই আলোচনায় ছিল এই প্রসঙ্গটি।

আর এবার স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি নোট ৭ বিস্ফোরণের ঘটনায় আবার এসেছে প্রসঙ্গটি। কিন্তু কথা হলো মোবাইলের ব্যাটারিতে কেন আগুন ধরে? উত্তর খুঁজতে হবে সেখানেই। কারণ মোবাইলের ব্যাটারিতে আগুন ধরার সঙ্গে আসলে মোবাইলের ব্র্যান্ডের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং উত্তর খুঁজতে হবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে।

আসলে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিতে আগুন ধরার সম্ভাবনা থাকেই। টেক বিশেষজ্ঞরা এর বেশ কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন। প্রথম কারণ হচ্ছে, এর নির্মাণ কৌশল। লিথিয়াম ব্যাটারির ক্যাথোড এবং এনোডকে আলাদা করার জন্যে ব্যবহার করা হয় সেপারেটর বা বিভাজক। এক ধরনের তরল অর্গানিক পদার্থ এই বিভাজক হিসেবে কাজ করে। একই সঙ্গে স্পঞ্জের মতো বস্তুও থাকে যারা ব্যাটারির ক্যাথোড ও এনোডকে আলাদা রাখে। এই সেপারেটরের বা বিভাজকের গণ্ডগোলেই অনেক সময় ব্যাটারিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। কারণ বিভাজক তরল দ্বারাই প্রবাহিত হয় লিথিয়াম। তাই অনেক সময় এটা ক্যাথোড এনোডকে এক করে বিস্ফোরণ ঘটায়।

আরেকটি কারণ হলো, যেসব ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হয় সেগুলো চার্জ দ্রুত করতে গিয়ে ব্যাটারিকে প্রচণ্ড গরম করে ফেলে। তাপের কারণে লিথিয়াম ক্যাথোডকে ঢেকে ফেলে এবং শর্ট সার্কিটের জন্ম দেয়।

তবে এগুলোই শেষ কথা নয়। অনেক সময় ব্যাটারি প্রস্তুতের সময় এর ছোট ছোট উপাদানে ক্রটি থেকে যায় আবার অনেক সময় সকল প্রক্রিয়া শেষে ব্যাটারি সিল বা পুরোপুরি ঢেকে দেয়ার সময় বায়ু বা অন্যান্য ছোট ছোট কণা থেকে গেলেও তা বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে। তাই ব্যাটারি যখন তার স্বাভাবিক আকার থেকে কিছুটা ফুলে বড় হয় বা তার আকৃতি বেঢপ হয়ে যায় তখন এর বিস্ফোরণের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু সব সময়ই যে ব্যাটারি ফুলে গেলেই এতে বিস্ফোরণ তা নয়। তবে কিছু কিছু ঘটনায় এমন উপসর্গ দেখা গেছে। তাই ব্যাটারির বিস্ফোরণে আগুন ধরে যাওয়া শুধু স্যামসাং বা আইফোনের সমস্যা নয় এটা একটি প্রক্রিয়াগত সমস্যা।

এখন এই সমস্যা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত এর সমাধান কীভাবে হয়।



মন্তব্য চালু নেই