যে কারণে খুন হলেন ছাত্রলীগ নেতা সোহেল (ভিডিও)

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অন্তর্কোন্দলে খুন হয়েছেন নাসিম আহমেদ সোহেল। তার সহপাঠী ও বিদায়ী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে।

আগামীকাল ৩১ মার্চ চতুর্থ বর্ষের বিদায় অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দামপাড়া ক্যাম্পাসের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে চলছিল মহড়া। মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে হঠাৎ ১৫-২০ জন যুবক এসে সবাইকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচআরএম বিভাগের এমবিএর শিক্ষার্থী নাসিম আহমেদ সোহেলকে টেনেহিঁচড়ে বের করে কক্ষের সামনে এনে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে উপর্যুপরি কোপায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাকে নগরীর প্রাইভেট ক্লিনিক সিএসসিআরে নেওয়া হলে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা সোহেলকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নাসিম আহমেদ সোহেলের সহপাঠী ও বিদায়ী শিক্ষার্থীরা জানান, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বেই সোহেলকে খুন করা হয়।

তারা জানান, ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক করা হয়েছিল সোহেলকে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রাক্তন সিটি মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা চেয়েছিল তাকে প্রধান অতিথি করা হোক এবং অন্যদিকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা চেয়েছিল তাকে প্রধান অতিথি করা হোক। সোহেল আ জ ম নাছিরের অনুসারী হওয়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে তাকেই দাওয়াত দেন। কিন্তু মেয়র নাছির ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে না পারায় প্রধান অতিথি করা হয় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেনকে। আর এরই জের ধরে সোহেলকে খুন করা হয় বলে জানান তার সহপাঠী ও বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

বেলা আড়াইটার দিকে ছাত্রলীগ নেতা নাসিম আহমেদ সোহেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরীর বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রবর্তক মোড়, ওয়াসা মোড়, লালখানবাজার মোড়, আগ্রাবাদ এক্সপ্রেস রোড, জামালখান, জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট, ষোলশহর, আন্দরকিল্লা, ওয়্যারলেসসহ বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট ও যানবাহন ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নিহত সোহেলের লাশ দেখতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এর পরই বিশ্ববিদ্যালয়টি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

নিহত নাসিম আহমেদ সোহেল নগরীর বায়েজিদ থানার শেরশাহ এলাকার বাসিন্দা ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবু তাহেরের ছেলে। আবু তাহেরের পৈতৃক নিবাস কুমিল্লায় হলেও দীর্ঘদিন যাবৎ শেরশাহ এলাকায় বাড়ি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

ভিডিও:

https://youtu.be/lFAqNxq3rUY



মন্তব্য চালু নেই