যে ছয়টি বদ অভ্যাস হতে পারে আপনার ব্যর্থতার কারণ

আপনার চিন্তার ধরণ আপনার মানসিক অবস্থার উপরেই শুধু প্রভাব ফেলে না বরং আপনার আচরণও নিয়ন্ত্রণ করে। আপনি ইতিবাচক চিন্তা করবেন, আপনার কাজের ফলও আসবে সেরকম। আর আপনার নেতিবাচক চিন্তা আপনার আচরণ ও কাজে একই ধরণের প্রভাব ফেলবে। সাইকোথেরাপিস্ট এ্যামি মরিন বলছেন, চিন্তার উপর যদি নিজের নিয়ন্ত্রণ না থাকে তবে কেউই তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্কার এ্যামি মনের শক্তি নিয়ে লিখেছেন একাধিক বই। ২০০২ সাল থেকে তিনি শিশু-কিশোর ও বয়স্কদের মানসিক কাউন্সিলিং নিয়ে কাজ করছেন। হেলফ ডটকম, ফক্স নিউজ, এবিসি’র মতো গণমাধ্যমগুলোতে তার উপস্থিতি সরব।
এ্যামি মরিন দেখাচ্ছেন, যে ছয়টি কারণে আপনি নিজেই হচ্ছেন নিজের ব্যর্থতার কারণ।

১। অজুহাত তৈরি
নিজের ব্যর্থতার জন্য অন্যকে দোষারোপ করা আপনাকে আপনার লক্ষ্য থেকে নিয়ে যাবে অনেক দূরে। এতে আপনি কখনোই নিজের ত্রুটি খুঁজে পাবেন না। আর ত্রুটি না জানলে সমাধান করবেন কীভাবে? বস আপনাকে সহোযোগিতা করছে না, কলিগরা আপনার কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে এধরণের অজুহাত আপনাকে এক জায়গায় আটকে রাখবে।
অজুহাত তৈরি বন্ধ করুন-
নিজের কাজের দিকে একাগ্র হোন। পরিস্থিতিকে দোষারোপ না করে বরং ইতিবাচকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করুন। পারফর্মেন্সের দিকে মনোযোগী হোন।

২। নেতিবাচক অনুমান
ভবিষ্যত সম্পর্কে আপনার নেতিবাচক অনুমান আপনাকে আরও দূর্বল করে দেবে। ধরুন আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন বলে ঠিক করেছেন, বক্তব্যটি তৈরিও করেছেন। কিন্তু মনে মনে বার বার ভাবছেন, বলার সময় নিশ্চই সব গুলিয়ে ফেলবেন। নিজেকে নিয়ে আপনার এই সন্দেহ আপনাকে আরও পেছনে টানবে।
আস্থা রাখুন-
এভাবে না ভেবে বরং নিজের উপর আস্থা রাখুন। কী হলে কী হতে পারে না ভেবে ভাবুন, যা হবে ভাল হবে। দুশ্চিন্তা না করে বরং আরও অনুশীলন করুন, দক্ষতা বাড়ান।

৩। দর্শকের হাততালির অপেক্ষা
আপনি অন্যদের কাছে নিজের যোগ্যতার সার্টিফিকেট চাইছেন না তো? অন্যদের প্রশংসা বা অনুমোদনের অপেক্ষাও আপনাকে পেছনে টানতে পারে। আপনি হয়ত খুব ভালভাবেই কাজ করেছেন, কিন্তু সে বিষয়ে অন্যের মতামত নিরপেক্ষ নাও হতে পারে। আপনার এবং তার বিচারের দৃষ্টিভঙ্গিও আলাদা হতে পারে।
নিজেকে নিজে বিচার করতে শিখুন-
আপনার কাজ কেমন হচ্ছে নিরপেক্ষ হয়ে বিচার করতে শিখুন। নিজের কাছে প্রশ্ন করুন, যাচাই করুন। নিজের বিচারক হোন নিজেই। আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে অনেকগুনে। উদ্বিগ্ন হবেন না।

৪। আত্মসন্দীহান মনোভাব
অনিরাপত্তাবোধ অচিরেই ধ্বংস করে দিতে পারে আপনার স্বপ্নগুলোকে। আপনি যদি একটা ইন্টারভিউ এর আগে ভাবতে থাকেন, আপনি আসলে পারবেন না, তাহলে তো আপনি নিজেই নিজেকে নার্ভাস করে দিচ্ছেন। নিজের যোগ্যতার প্রতি যদি আপনি নিজেই সন্দিহান হোন তাহলে ইন্টারভিউ বোর্ডের সবাইকে সন্তুষ্ট করবেন কীভাবে? প্রত্যাখান তখন এই সন্দেহ প্রবণতায় আগুনে ঘি ঢালার মতো হবে এবং নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা একটি এমন চক্র যা থেকে বের হওয়া কঠিন।
সন্দেহ করা বন্ধ করুন-
আপনি যতটুকু প্রস্তুতি নিয়েছেন ততটুকুই পারবেন। নিজের দক্ষতা, বুদ্ধি এবং প্রাপ্তির উপর ভরসা রাখতে শিখুন।

৫। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস
নিজেকে সর্বোক্ষণ হেয় করা যেমন ক্ষতিকর তেমনি আবার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও সাফল্যের বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আপনি কোন প্রেজেন্টেশনে অংশ নিয়েছেন, সেখানে কোন বিষয়ে একজন মার্কেট বিশেষজ্ঞকে চ্যালেঞ্জ করে বসলেন, অথচ আপনি নিজেই হয়ত সে বিষয়ে খুব একটা জানেন না। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে ভুলটি করে ফেললেন।
নিজেকে চিনুন-
নিজের দক্ষতা চিনবার পাশাপাশি ঘাটতিগুলোও চিনুন। আরও জানার চেষ্টা করুন। আপনি যা জানেন তাই সবটা নয়।

৬। ২য় অনুমান
আপনি কি প্রতিটা বিষয়ে উত্তর দিতে গিয়ে ২য় কোন অপশন নিয়ে ভাবছেন? আপনার মধ্যে কি কাজ করছে, এটা হতেও পারে নাও হতে পারে? প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর হতে হবে একটি এবং শুধু একটি। আপনার পছন্দ যত পরিবর্তন হবে ততোই অন্যের কাছে মনে হবে, আপনি নিজেই আসলে জানেন না আপনি কি চান!
২য় অনুমান বন্ধ করুন
মনোযোগ দিয়ে ভাবুন, তারপর উত্তর দিন। আগে বুঝে নিন কোনটি সঠিক এবং আপনি কি চান! বর্তমানকে বিচার করতে শিখুন।



মন্তব্য চালু নেই