যে ম্যাচ দেখবে ৭০ কোটি মানুষ!

এল ক্লাসিকো নয় এটি। রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার ম্যাচের মতো করে এই ম্যাচটার কোনো গালভরা নামও নেই। লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের মতো বিশ্বের অবিসংবাদী সেরারাও খেলবেন না এই ম্যাচে। তবু এখানে রোমাঞ্চ লাল রং হয়ে ঝরবে, দুই দলের খেলোয়াড়দের ঘামে মিশে থাকবে শতাব্দী ধরে চলে আসা লড়াইয়ের গন্ধ।

কোন ম্যাচ? বোঝারই কথা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও লিভারপুল! বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক দ্বৈরথের একটি। দর্শকসংখ্যা বিবেচনায় ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় ম্যাচ।

আজ রাত একটায় যখন ম্যাচটি হবে, বিশ্বের ২০০টি দেশের মানুষ টিভি খুলে বসে পড়বে ফুটবলীয় রোমাঞ্চের খোঁজে। গত বছরও ২০০টি দেশে একসঙ্গে খেলাটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল। ফুটবলের ইতিহাসে আর কোনো ম্যাচ এতগুলো দেশে একসঙ্গে প্রচারিত হয়নি। এবারও সংখ্যাটা একই থাকবে। আর ঠিক কতজন মানুষ দেখবে ম্যাচটি? সংখ্যাটা চমকে দেওয়ার মতোই। পুরো বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ! প্রায় ৭০০ মিলিয়ন, ৭০ কোটি মানুষ!

এর বাইরেও ৫৪ হাজারের বেশি কিছু ভাগ্যবান দর্শক আছেন, যাঁরা কাল অ্যানফিল্ডের গ্যালারিতে বসে চোখের সামনেই দেখবেন পগবা-ইব্রাহিমোভিচ ও হেন্ডারসন-কুতিনহোদের ৯০ মিনিটের ফুটবলযুদ্ধ। অবশ্য এই ৫৪ হাজারকে আগেই দুই ক্লাব থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, মাঠে কোনো মারামারি নয়, একে অন্যকে কোনো উল্টোপাল্টা কথাও নয়। দুই দলের লড়াইটাই এমন, মাঠ ছাপিয়ে যার রেশ ছড়িয়ে পড়ে সমর্থকদের মধ্যেও।

অবশ্য ম্যাচটার আকর্ষণও তো তেমনই। মেসি-রোনালদো না থাকতে পারেন, তবে এখানে বর্তমান সময়ের বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়টি তো আছেন, পল পগবা। ওয়েইন রুনি হয়তো ইউনাইটেডের মূল একাদশে সুযোগ না পেতে পারেন। তাতেও কিছু কমবেশি হচ্ছে কি? পগবাকে সঙ্গ দিতে ইব্রাহিমোভিচ-মেখিতারিয়ানরা তো আছেন।

লিভারপুলেরই-বা কম কী! এই মৌসুমে নিজেকে নতুন করে ফিরে পাওয়া জর্ডান হেন্ডারসন আছেন, আর ব্রাজিলিয়ান সাম্বার স্বাদ দিতে আছেন ফিলিপে কুতিনহো ও রবার্তো ফিরমিনো। তার ওপর লিগ শিরোপার লড়াইয়েও এই ম্যাচ গড়ে দিতে পারে বড় ব্যবধান। প্রিমিয়ার লিগে চেলসি-আর্সেনাল জিতলেও ম্যানচেস্টার সিটি ও টটেনহাম ড্র করেছে, লিভারপুল-ইউনাইটেড ম্যাচ তাই হয়ে গেছে আরও গুরুত্বপূর্ণ।

শুধু মাঠ নয়, ডাগআউটেও চোখ রাখতে হবে। বর্তমান সময়ের সেরা কোচদের দুজন যে সেখানে থাকছেন, লিভারপুলে ইয়ুর্গেন ক্লপ, ইউনাইটেডে হোসে মরিনহো। ক্লপের ঝাঁপাঝাঁপি, মরিনহোর অভিব্যক্তি—বাড়তি বিনোদন হয়ে থাকছে সেগুলোও।

এই ম্যাচে চোখ না রেখে পারা যায়! বিশ্বের ৭০ কোটি মানুষ তো এই রোমাঞ্চই দেখতে চাইছে।



মন্তব্য চালু নেই