যে স্কুলে সপ্তাহে পাঁচদিন ছুটি!

আজব এক স্কুলের খোঁজ পাওয়া গেছে। যে স্কুলে প্রতিদিন সকলের আসার দরকার নেই। শিক্ষার্থীরা কে কবে স্কুলে আসবে, তা রুটিন তৈরি করে ঠিক করে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি কোনো স্কুল নয়, সরকারি প্রাথমিক স্কুলেই এমন কাণ্ড ঘটেছে।

তবে ঘটনা অবশ্যই বাংলাদেশের নয়। ওপার বাংলার জলপাইগুড়িতে খোঁজ পাওয়া এমন আজব স্কুলের নিয়ম কানুন নিয়ে এখন ভারতীয় মিডিয়া তোলপাড়!

কিন্তু জলপাইগুড়ি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে এমন অদ্ভূত নিয়মের কারণ কী? অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিদিন সব শিক্ষার্থীকে পড়ানোর মতো পর্যাপ্ত শিক্ষিকাই নেই সেই স্কুলে। তাই প্রাথমিক শাখা থেকেই ছাত্রীদের অভিভাবকদের ডেকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষিকা সাগরিকা দত্ত অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন তিনি।

ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রি-প্রাইমারি, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস হবে শুক্র এবং শনিবারে। সোম থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হবে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস। ফলে কারও স্কুলে আসতে হবে সপ্তাহে দু’দিন, কারও আবার চারদিন। প্রি-প্রাইমারি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহের বাকি পাঁচদিন ছুটি। আর বাকিদের ছুটি সপ্তাহে তিনদিন।

জলপাইগুড়ি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে মোট ছাত্রী সংখ্যা ৩৪৯ জন। কিন্তু বর্তমানে ১৩জন শিক্ষিকা থাকার কথা থাকলেও স্কুলে মাত্র ৪ জন শিক্ষিকা রয়েছেন। গত কয়েক বছরে প্রাথমিক বিভাগে ৯ জন শিক্ষিকা অবসর নিয়েছেন। বাকি ৪ জনের মধ্যে একজন শিক্ষা দফতরের কমিশনারের লিখিত নির্দেশ নিয়ে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক বিভাগে উন্নীত হয়ে শিক্ষকতা করছেন। অন্য ৩ জনের মধ্যে দ্বিতীয় জন দীর্ঘ ছুটিতে রয়েছেন। ফলে প্রাথমিক বিভাগ চলছে মাত্র ২ জন শিক্ষিকাকে দিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই বিপুল সংখ্যক ছাত্রীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন দুই শিক্ষিকা। ছাত্রীদের পঠনপাঠন প্রায় লাটে উঠেছে। এই অবস্থায় অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে দ্বারস্থ হন মঙ্গলবার।

এদিকে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভগত জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যার বিষয়টি তিনি প্রধান শিক্ষিকার কাছ থেকে শুনেছেন। রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরে বিষয়টি জানিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন জেলাশাসক। যতদিন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, ততদিন এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের ছুটিই ছুটি!



মন্তব্য চালু নেই