যে ৫ টি অসাবধানতার কারণে বেড়ে চলেছে সড়ক দূর্ঘটনা

“একটি দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না” বাক্যটি আমরা সবাই অনেকবার শুনেছি। কিন্তু আমাদের ছোট ছোট ভুলে রোজ ঘটছে অগুণতি সড়ক দূর্ঘটনা। সাম্প্রতিককালে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, একের পর এক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই। অথচ কিছু সতর্কতা অবলম্বন ও যথাযথ আইন মান্য করলে এগুলো অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব। আসুন জেনে নেই প্রতিদিন মাত্র ৫ টি সাধারণ ভুলে কীভাবে বাড়ছে এই দূর্ঘটনাগুলো।

১। চালকের মনোযোগ বিচ্যুতি
গবেষণায় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশী সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে চালকের মনোযোগ বিচ্যুতির কারণে। যেসব চালক পূর্ণ মনোযোগের সাথে গাড়ি চালান, চালনার সময় ফোনে কথা বলা, খাওয়া বা এধরণের কাজ থেকে বিরত থাকেন তদের গাড়ি কম দূর্ঘটনার স্বীকার হয়। তবে এর একটি ভিন্ন খারাপদিকও আছে। যারা অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়ে শুধু সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালান অন্যান্য চালকদের জন্য তারা বিপদজনক। কারণ তাদের সামান্যতম চিত্তবিক্ষেপ অনেক বড় দূর্ঘটনা ঘটায়।

২। মাদকাসক্ত চালক
মারাত্মক সব সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে চালক মাদকাসক্ত থাকার কারণে। মাদক সেবন করে গাড়ি চালানো আইনত দন্ডনীয়। এতে শুধু চালকের জীবনই ঝুঁকিগ্রস্থ হয় না, আশপাশের অন্যান্য গাড়ির চালকেরাও যে কোন সময় ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। এমনকি পথচারী, ফুটপাতে থাকা মানুষেরা যে কেউ এই ধরণের চালকের কারণে মারাত্মক জীবন ঝুঁকিতে থাকেন। মাদকাসক্ত চালক ফুটপাতের উপর গাড়ি তুলে দিয়েছেন আর ফুটপাতে ঘুমন্ত মানুষ মারা গেছেন গাড়িচাপা পড়ে এমন খবর প্রায়ই আসে খবরের কাগজে।

৩। অসতর্কতা এবং ওভারটেক প্রবণতা
এমন অনেক চালক আছেন যারা গাড়ি চালানোর সময় খুবই অসতর্ক থাকেন। সড়ক নিরিবিলি পেলেই অনেক দ্রুত গাড়ি চালান। রাস্তার অনেক জায়গায় স্পীড ব্রেকার থাকে, তারা এগুলো খেয়াল করেন না। অন্য গাড়িকে ওভারটেক করার প্রবণতা থাকে অনেক বেশী। যে ভুলের মাশুল দিতে হয় জীবন হারিয়ে। জেব্রা ক্রসিং এ রাস্তা পারাপাররত মানুষও জীবনঝুঁকিতে থাকেন এদের কারণে। এই অসতর্ক চালকেরা অন্য চালকদেরও ভুল করতে বাধ্য করেন।

৪। সড়ক এবং আবহাওয়ার কারণে
কিছু সড়ক খুবই অনিরাপদ হয়। শহরের রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে অভ্যস্থ চালকের জন্য হঠাৎ পাহাড়ি রাস্তা খুবই অনিরাপদ। আবার কিছু সড়ক তৈরি করার সময় এমন কিছু বাঁক দেয়া হয় যেখানে বিপরীত দিক থেকে গাড়ি আসলে নজরে পড়ে না। অনেক চালক এসব সমস্যা অনেক সময় খেয়াল করেন না, ফলে দূর্ঘটনা ঘটে। আবার আবহাওয়া খারাপ হলেও সড়ক দূর্ঘটনা বাড়তে পারে। যেমন শীতের সময় ভীষণ কুয়াশায় গাড়ি চালানো ঝুকিপূর্ণ। ভারী বর্ষনের ফলে রাস্তা নষ্ট হয়, পানি জমে সড়ক গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে, Hydroplaning এর কারণে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

৫। গাড়ির মেইন্টেনেন্স
শেষ সড়ক দূর্ঘটনার কারণ হিসেবে দেখা হয় গাড়ির মেইন্টেনেন্স এর অভাবকে। গাড়ির ব্রেক ফেল করা, চাকা পাংচার হওয়া, ইঞ্জিন নষ্ট হওয়া সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ। গাড়ির মালিকেরা গাড়ির ত্রুটিগলো মেরামত করেন না। অনেকসময় তো সড়কে চলাচলের অযোগ্য গাড়িও রাস্তায় নামানো হয়। লোকাল বাসগুলো খেয়াল করলেই এ চিত্র চলে আসবে আমাদের চোখের সামনে।

মৃত্যু মানুষের স্বাভাবিক নিয়তি। তাই বলে যদি এমন হয়, কোনো দুর্ঘটনার ফলে নিমিষেই ঝরে যাচ্ছে একেকটি প্রাণ, তবে তা সত্যিই বেদনাদায়ক এবং একই সঙ্গে উদ্বেগের। তাই সতর্ক হতে হবে। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে জেনে নিতে হবে ট্রাফিক নিয়মকানুনগুলো।



মন্তব্য চালু নেই