যে ৭টি খাবার আসলে খাওয়া ভালো নয় মোটেও!

আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হন তাহলে আপনার খাদ্যাভ্যাসের প্রতি নজর দিতে হবে। বেশিরভাগ মানুষই কী খাচ্ছেন সেই বিষয়ে সচেতন নয়। জাঙ্ক ফুড খাওয়া ভালো না জেনেও তারা তা খান যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হয়। খারাপ খাদ্য খাওয়ার পরিণতি কয়েক বছর পড়ে টের পাওয়া যায় এবং ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। দীর্ঘদিন যাবত খারাপ খাদ্য গ্রহণের ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় যা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। যে খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেব আমরা আজকের এই ফিচারে।

১। বেক করা মিষ্টি জাতীয় খাবার
মাফিন, কুকিজ, কেক ও ডোনাট এই সব খাবারই মজাদার ও প্রলুব্ধকারক মিষ্টি জাতীয় খাবার যা মানুষ এড়িয়ে যেতে পারেনা। কিন্তু এই বেক করা মিষ্টি খাবার গুলো চিনির বোমা। একটি সাধারণ ডোনাটে ২৫০-৫০০ ক্যালরি থাকে এবং ৬০ গ্রাম চিনি থাকে। এই খাবারটি যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা বেশিরভাগ মানুষই জানে তারপরও তারা খায় কারণ এটি টেস্টি। এই ধরণের খাবার গুলো পরিপাকের সমস্যা সৃষ্টি করে, মেদ বৃদ্ধি করে এবং অতিরিক্ত চিনি কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ ও দাঁতের সমস্যা সৃষ্টি করে। আপনার ক্ষুধা নিবারণের জন্য ডার্ক চকলেট বা প্রোটিন বার খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে।

২। সিরিয়াল
তাড়াহুড়ার সময় সবচেয়ে সহজ নাস্তা হচ্ছে সিরিয়াল। এটা শর্করা ও চিনির সংমিশ্রণে তৈরি। চিনি ইনসুলিন এর রেচন বৃদ্ধি করে যা এমাইনো এসিড ট্রিপ্টোফ্যান এর প্রভাবকে উদ্দীপিত করে। এই উপাদানটি মস্তিষ্কে পৌঁছে ঘুম/নিদ্রালু ভাব সৃষ্টি করে। এতে উচ্চমাত্রার গ্লুটেন থাকে যা পাকস্থলীর প্রাচীরে প্রদাহ সৃষ্টি করবে, গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়। এর পরিবর্তে ওটমিল খেতে পারেন।

৩। সাদা চকলেট
সব চকলেটই একই রকম না। সাদা ও কালো চকলেটের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ডার্ক চকলেটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অন্যদিকে সাদা চকলেটের ৩ আউন্সে ৪৫ গ্রাম চিনি থাকে। বেশি পরিমাণে সাদা চকলেট খেলে মেদবৃদ্ধি ও দাঁতক্ষয় হয়। চকলেট না খাওয়াই ভালো তবে যদি খেতেই হয় তাহলে প্রতিদিন ১আউন্স ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। মনে রাখবেন চকলেট কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করে তাই বেশি খাবেন না।

৪। সাদা পাউরুটি
বেশিরভাগ বাসাতেই সাদা পাউরুটি প্রধান খাবার। কিন্তু এতে কোন স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান থাকেনা। এতে প্রচুর চিনি থাকে এবং আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনা। কারণ সাদা পাউরুটি খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই আপনি ক্ষুধা অনুভব করেন এবং অন্য কোন স্ন্যাক্স খান। সাদা পাউরুটির পরিবর্তে গোটা শস্য বা আটার রুটি খাওয়া স্বাস্থ্যকর।

৫। প্যাকেটজাত ফলের জুস
হাঁ ঠিকই দেখছেন ‘ফলের জুস’ ও স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। কারণ এগুলোতে প্রচুর চিনি থাকে। তাই প্যাকেটজাত ফ্রুট জুস খাবেন না। বরং তাজা ফল কিনে এনে ব্লেন্ডারে জুস তৈরি করে খান। ফলের রস খাওয়ার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় এটি।

৬। মার্জারিন
যেহেতু মার্জারিন ভেজিটেবল অয়েল দিয়ে তৈরি করা হয় এবং এতে কোলেস্টেরল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে তাই একে পুষ্টিকর ভাবা হয়। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন খাদ্যের কোলেস্টেরল ততোটা ক্ষতিকর নয় যতোটা তারা ভেবে ছিলেন। মার্জারিনে উচ্চমাত্রার লবণ থাকে এবং ধমনীর প্রতিবন্ধক সৃষ্টিকারী ট্রান্সফ্যাট থাকে। ট্রান্সফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এর পরিবর্তে অলিভ ওয়েল বা আসল মাখন গ্রহণ করুন।

৭। ফিশ স্টিক
ফিশ স্টিক মাছ দিয়ে তৈরি বলে অনেকেই একে স্বাস্থ্যকর মনে করে। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। ফিশ স্টিক তেলে ভাজা হয় এবং ভাজা পাউরুটি দিয়ে এদের মোড়ানো হয় বলে ফ্রাই এর মতোই অস্বাস্থ্যকর এটি। তাজা মাছ খুবই স্বাস্থ্যকর তবে ফিশ স্টিক অস্বাস্থ্যকর বলে এড়িয়ে চলুন।
তবে স্বাস্থ্যকর খাবার অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়া ও পানি খুব বেশি পান করাও স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর। মূল বিষয় হচ্ছে সংযমের সাথে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা।



মন্তব্য চালু নেই