যৌনকর্মীদের কাছে যেভাবে উপভোগ্য হয়ে ওঠে যৌন পেশা

সবাই ভাবেন, যৌনকর্মীদের জীবনটা অভিশপ্ত। একাধিক পুরুষের সঙ্গে সেক্স করার কারণে তারা বিষয়টি আবেগগত দিক থেকে অনুভব করতে পারে না বলেই মনে করা হয়।

সাধারণ মানুষ যৌনতাকে যেভাবে উপভোগ করেন, যৌনকর্মীদের কাছে তেমনটা নয়। এটা তাদের পেশা যাতে কখনো তৃপ্তি মেলে না। কিন্তু নতুন এক গবেষণা দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য।

অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক যৌনকর্মীদের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন। তারা দেখতে চেয়েছেন, যৌনকর্মীরা কিভাবে খদ্দেরদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠে? কিভাবেই বা খদ্দেরদের সঙ্গে যৌনতা উপভোগ করেন? কারণ তাদের পেশাটাই এমন, যেখানে মানুষের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয়ে উঠতে হয় এবং কাজটা উপভোগ্য করতে হয়।

এমনই এক যৌনকর্মীর নাম কেট। তিনি এ গবেষণায় অংশ নিয়েছেন। জানান, এ পেশায় নামার আগে তিনি অন্য পুরুষের সঙ্গে সেক্স করে কখনোই তৃপ্তিলাভ করেননি। এ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার বিস্তারও ঘটেনি তেমন। কিন্তু যৌনকর্মী হওয়ার পর তিনি সেক্সের উপভোগ্য ও তৃপ্তিকর দিকটি বুঝতে পেরেছেন। তা ছাড়া সবাই যেমনটা মনে করেন, এই জীবন তেমনটাও নয়। অনেক ক্লায়েন্ট আছেন যাদের পেয়ে তিনি রীতিমতো মুগ্ধ।

বলেন, প্রথম যে খদ্দের আমার কাছে আসেন তাকে দেখেই আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। আঁটোসাঁটো বক্সার শর্ট পরে উদয় হন তিনি। দারুণ হট ছিলেন। দারুণ আকর্ষণীয় এক তরুণ। আর এমন অনেকে আছেন যারা আকর্ষণীয় নন, কিন্তু তারা ‘সুইট’ এবং ‘লাভলি’ ছিলেন।

এ ছাড়া এই পেশায় এসে তিনি যৌন জীবনকে আবিষ্কার করতে পেরেছেন কোনো ধরনের আবেগপ্রসূত সম্পর্কে না জড়িয়েই। আবেগগত সম্পর্ক ও সঙ্গীর কাছে আশাবাদ এক ধরনের ওজন যা ঘাড়ে চেপে বসে, জানান কেট।

আরেক যৌনকর্মীর নাম মেলিনা। এ সম্পর্ক যে কেবল অন্তরঙ্গতা ও আবেগ থেকে দূরে তাই নয়, এখান থেকেই মেলিনা বুঝতে পেরেছেন যৌনতার কোন বিষয়গুলো তিনি আসলে ভালোবাসেন। এ ছাড়া কোনো দুশ্চিন্তা ছাড়াই একে উপভোগ করা যায়। তাই এই ইন্ডাস্ট্রিতে যারা নতুন আসছেন যারা যেন একে নিরেট চাকরি হিসাবে না নেন। নিজে কিভাবে উপভোগ করছেন সেদিকেও নজর দিতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার লা ট্রোব ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. এলিজাবেথ মেগান স্মিথ জানান, স্বল্প পরিসরের এ গবেষণায় যৌনকর্মীদের অনেক কিছুই উঠে এসেছে। ভিক্টোরিয়ার সেক্স ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন এমন ৯ জন কর্মীর সাক্ষাৎকার নেন তিনি। তারা অভিজ্ঞতার বয়ানে অনেক সময় ছবিও ব্যবহার করেন।

ড. স্মিথ তার গবেষণালব্ধ তথ্যগুলোকে বিশ্লেষণ করতে ফ্রেঞ্চ দার্শনিক মিচেল ফোকাল্টের তত্ত্ব ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তার গোপন সম্পর্ক রয়েছে।

ড. স্মিথ ব্যাখ্যা করে বলেন, এ গবেষণার মাধ্যমে বোঝা যাবে যৌনকর্মীরা পেশার সঙ্গে কিভাবে যুক্ত হয়। কিন্তু সব নারীই যে যৌন সেবা দিতে পছন্দ করেন এমনটা মনে করলে চলবে না।

গবেষণাপত্রটি ‘সেক্সুয়ালিটিস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, যৌনকর্মীদের স্বাভাবিক জীবন ও কাজে ফেরত আসার জন্য পুরনো কর্মক্ষেত্রে থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট



মন্তব্য চালু নেই