রঙে রসে ভরপুর চিরিরবন্দরের গোলাপী লিচু

মোহাম্মদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুর সহ চিরিরবন্দরের লিচু বৈশিষ্টের কারণে অন্য এলাকার লিচুর চেয়ে আলাদা। গোলাপি এই লিচু মুখে দিলেই ঘ্রান আর মিষ্টি রসে মন-প্রান ভরে যায়।

দেশ ব্যাপী খ্যাত দিনাজপুরের লিচুতে এখন মেতে উঠেছে পুরো জেলা।চিরিরবন্দরের প্রতিটি বাড়ির বসত ভিটায় বা আঙ্গিনায় গাছে গাছে লাল লিচুতে রঙিন হয়ে গেছে পুরো উপজেলা। পুরো উপজেলা জুড়ে এখন গাছ ভর্তি লিচু। থোকায় থোকায় বাহারি লিচু সবার মন কাড়ছে। সেই সাথে লিচুর মৌ মৌ গন্ধ আর ছোট ছোট পাখিদের কিচির-মিচির শব্দে এলাকা মুখরিত। এবার সুস্বাদু ফল লিচুর ফলন গত বছরের চেয়ে অনেক কম হয়েছে বলে চাষীরা জানিয়েছেন। বাগান থেকে লিচু তোলার শেষ সময় পর্যন্ত প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে লিচু চাষীরা আর্থিকভাবে কিছুটা লাভবান হবেন বলে অনেকে মনে করছেন। এবারও গাছে মুকুল আসার আগেই ব্যাপারীরা অনেক লিচু গাছ আগাম কিনে নিয়ে গেছেন। চাষীরা আর্থিকভাবে বেশি লাভের আশায় লিচুর গুটি রক্ষার জন্য গাছে নিয়মিত ভিটামিন ওষুধ স্প্রে এবং গাছের গোড়ায় পানি ও সার দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও পাকা লিচু রক্ষার জন্য চাষীরা সারা রাত সজাগ থেকে বাগান পাহাড়া দিচ্ছেন।

চিরিরবন্দর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত চিরিরবন্দও উপজেলা। লিচু সুস্বাদু ও আগাম জাতের হওয়ায় চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিটি লিচুই গোলাপী রঙের, শাঁস মোটা ও রসে ভরপুর। খেতে ভারি মজা। গন্ধও অতুলনীয়।

চিরিরবন্দর সাতনালা লিচু চাষী মো: আব্দুল রহমান জানান, দিনে বিভিন্ন পাখি ও কিশোর-কিশোরীদের অত্যাচার এবং রাতে বাদুরের উপদ্রব থেকে লিচু রক্ষা করতে দিনরাত তাদের বাগান পাহাড়া দিতে হচ্ছে। এ বছর লিচুর ফলন কম হলেও লিচুর দানা ও আকার বড় হয়েছে।

লিচুর পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা মো: রহিম ইসলাম জানান, কাল-বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে এ বছর লিচুর ফলন কম হয়েছে। বর্তমানে পুরো দমে গাছ থেকে লিচু পাড়ার কাজ ও বিক্রি শুরু হয়েছে। রহিম ইসলাম আরও জানান, গত বছর ১০০ লিচুর দাম ছিল ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এবার লিচুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

পাইকাররা প্রতি বছর এখান থেকে লিচু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি করে থাকে। অন্যান্য এলাকার লিচুর দিনাজপুরের লিচুর স্বাদ আলাদা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন এসে ভিড় জমায় লিচু কেনার জন্য। গাছে মুকুল আসার আগেই গাছের মালিককে অগ্রিম টাকা দিয়ে লিচু গাছ কিনে নিয়ে যায় স্থানীয় ব্যাপারীরা।



মন্তব্য চালু নেই