রজব মাস : মুসলমানের জন্য বরকতময়

পবিত্র রমজান মাসের আগমনী বার্তা নিয়ে আজ শুরু হলো রজব মাস। গতকাল (২৯ মার্চ ২০১৭) পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে, যা আরবি হিজরি সনের সপ্তম মাস। রজব শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো সম্মান করা।

মহিমান্বিত রজব মাস আশহুরে হুরুমের অন্তর্গত। মহাসম্মানিত চারটি মাসের মধ্যে রজব মাসও একটি। পবিত্র কুরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারোটি আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে। সুতরাং তোমরা এই মাসসমূহে নিজেদের প্রতি অত্যাচার কর না।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ৩৪)

এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, আল্লাহ তাআলা মাখলুকাতের প্রতি অনুগ্রহ করে বিশেষ বিশেষ দিন, রাত ও মাসকে ফজিলতময় ও বরকতপূর্ণ করেছেন। দিন, রাত, মাসের ইবাদতে অনেক ছাওয়াবের ঘোষণাও দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিত এ সব দিন, রাত, মাসের ফজিলত ও বরকত লাভে সচেষ্ট হওয়া।

আরবরা রজব মাসকে শাহরুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর মাস বলে আখ্যায়িত করতো এবং বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা করতো। হাদিসে এসেছে, ‘হযরত আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘বার মাসে বছর। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক, আর তা হচ্ছে- জিলক্বদ, জিলহজ ও মহররম। আর চতুর্থ মাসটি হল- রজব, যা জমাদিউস সানি ও শা’বান মাসের মর্ধবর্তী মাস। (বুখারি)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাসের অত্যাধিক ফজিলত ও মর্যাদার কারণে বিশেষ দোয়া করতেন- ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শা’বান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শা’বান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।’

আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ও সম্মানিত মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে অনেক ছাওয়াব ও মর্যাদা লাভ হয় এবং বাকি মাসগুলোতেও বেশি বেশি ইবাদত করার সুযোগ তৈরি হয়। আবার আশহুরে হুরুমে যাবতীয় গোনাহ থেকে বিরত থাকলে বছরের বাকী মাসগুলোতেও গোনাহমুক্ত জীবন-যাপনের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়।

হাদিসের অসংখ্যা বর্ণনায় এসেছে, ‘রজব মাস থেকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের প্রস্তুতিস্বরূপ রোজা রাখা শুরু করতেন। এ মাসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক এক নাগাড়ে অধিক রোজা রাখাই প্রমাণ করে যে, রজব মাস অনেক সম্মানিত মাস।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রজব মাসে সময়ের মূল্য বুঝার, সময়কে কাজে লাগানোর এবং বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মাস, দিন, রাতগুলোকে যথাযথ মূল্যায়ন করার তাওফিক করুন এবং গোনাহের কাজ থেকে বিরত থেকে রমজানের ইবাদাত-বন্দেগির জন্য নিজেদেরকে তৈরি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।



মন্তব্য চালু নেই