রহস্যেঘেরা অভিশপ্ত গাড়ি !

আমরা অনেকেই বিভিন্ন ভৌতিক বাড়ির ঘটনা শুনেছি, কিন্তু ভৌতিক গাড়ি! এ কেমন অদ্ভুদ ব্যাপার । হ্যাঁ, আজ আপনাদের এমন একটি ভৌতিক গাড়ির কথা বলবো, যাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য দায়ী করে অনেকেই । সেই যুদ্ধে নিহতদের কথা বাদ দিলেও আসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণ ঘটিয়েছে এ গাড়ি ।

গাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আক উয়ুক ফাদিনান্দের জন্য । এটার ব্যবহারের প্রথম দিনই তিনি এবং তার স্ত্রী ডাচেস হোহেন নিহত হন আঁততায়ীর গুলিতে।

এ কারণে ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই সাবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে অস্ট্রিয়া । অস্ট্রিয়া সরকারের পক্ষে ঘোষণা করলেন ফাইভ-বি দলের সেনা অধিনায়ক পোতারেক । তিনি সারাজিত গভর্নরের কাছে থেকে গাড়িটি কিনে নেন । দুর্ভাগ্যবশত তিনি যুদ্ধে পরাজিত হন এবং মৃত্যুবরণ করেন ।

১৯১৫ সালে গাড়িটি প্রদান করা হয় ফাইভ-বি সেনাদলের ক্যাপ্টেনকে । তার ভাগ্যে এটি ব্যবহার করার সুযোগ মেলে মাএ ৯ দিন । দুজন যাএীসহ মৃত্যু হয় তার ।

এরপর ১৯১৮ সালে যুগোস্লাভের গভর্নর অস্ট্রিয়া সফরে আসেন এবং গাড়িটি কিনে নেন । ১৯১৯ সালে ব্রেক ফেল করে মারা যান তিনি।

এরপর সারকিন্স নামের একজন সরকারি ডাক্তার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি কিনে নেন । রোগী দেখতে যাবার সময় রাস্তার পাশের খালে পড়ে তিনি মারা যান ।

ডাক্তার মৃত্যুর পর গাড়িটি বহুবার হাতবদল হযেছে আর প্রতিবারই মালিকের মৃত্যু হয়েছে । এতো দুর্নাম থাকা সত্বেও অবশেষে গাড়িটি কিনে নেন এক সংগ্রাহক । একবার মোটাল যার্লিতে অংশ নিতে গিয়ে তিনি মারা যান ।

এরপর গাড়িটি আসে এক মোটর ম্যাকানিকালের কাছে । তিনি গাড়িটিকে নতুন করে তোলেন এবং এক ধনী কৃষকের কাছে বেচে দেন । সারায়েভো শহরে যেদিন তিনি গাড়িটি নিয়ে প্রথম প্রবেশ করলেন সে দিনই শুরু হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ।

সবাই ধরে নিল অভিশপ্ত ভৌতিক ওই গাড়িটির জন্যই শুরু হলো আরেকটি যুদ্ধ । শহরের সবার প্রতিবাদের মুখে জেলা প্রশাসক আদেশ করলেন, হয় শহর ত্যাগ করতে হবে নয়তো গাড়ির মায়া ত্যাগ করতে হবে ।

প্রথম শর্তকে বেছে নিয়ে শহর ত্যাগ করে অন্য শহরে রওনা দিলেন । কিছুদূর এগুতেই গাড়িটি বিগরে গেল । অগত্য কোনো উপায় না দেখে দুটি বলদ গাড়ির সাথে জুড়ে দিলেন আর তিনি বসলেন বনেটের ওপর ।

কিছুদূর এগুতেই গাড়িটি হঠাৎ স্টার্ট হয় এবং মুহূতেই বলদ দুটোকে ধাক্কা দিয়ে বনটের ওপর বসে থাকা মানুষটিকে পিষে ফেলে।

১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে ওই গাড়িটি কিনে নেন হসফিল্ট নামের একজন মোটর ম্যাকানিকস । মেরামত করে নিজের ব্যবহারের জন্য রেখে দেন গাড়িটি । বন্ধুর জন্মদিনে যাওযার পথে একজন মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিসহ নিহত হন ছয় বন্ধু ।

এরপর অস্ট্রিয়া গাড়িটি কিনে রাখার ব্যবস্থা করে । বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪৫ সালের ২২জুলাই বোমা পড়লে গাড়িসহ পুরো মিউজিয়ামটিই পুড়ে যায় ।

বিজ্ঞান এখনো এই গাড়ির রহস্য বের করতে পারেনি ।



মন্তব্য চালু নেই