রাজধানীতে বাসে পেট্রোলবোমা, দগ্ধ ২৯

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহণের একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ২৯ যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। কয়েকজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমাদের প্রতিবেদক আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানতে পেরেছেন, তারা হলেন : সালমান, নাজমুল, শরীফ খান, সালাহউদ্দিন, ওসমান, মোশাররফ হোসেন, রাশেদ, বাবুল, সোমেন, ইয়াসির আরাফাত, রাজীব, হারিস, সেতু, নূর আলম, শাহিদা বেগম, জমির আলী, আলামিন, শহিদুল ইসলাম, মোজাফফর মোল্যা, শাহজাহান সরদার।

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে রূপগঞ্জগামী গ্লোরি পরিবহণের একটি বাস যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকা অতিক্রম করার সময় বাসটিতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা।

যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অবনী শঙ্কর জানান, অবরোধসমর্থক কেউ নাশকতার উদ্দেশ্যে বাসে পেট্রোলবোমা ছুড়ে থাকতে পারে।

তিনি আরো জানান, বাসটিতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ যাত্রী ছিল। পেট্রোলবোমায় অধিকাংশ যাত্রী দগ্ধ হয়েছে। অনেককে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সানম্ত লাল সেন জানিয়েছেন, যাত্রীবাড়ীতে বাসে পেট্রোলবোমা হামলায় দগ্ধ হওয়া মোট ২৯ জন বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন নারী। নয়জনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। বাকিদের অনেকেই গুরুতর আহত।

 

রাজশাহীর তানোর বাসে পেট্রোলবোমা, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৯

রাজশাহীর তানোর উপজেলা সদরের ব্র্যাক অফিসের সামনে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় নারী ও শিশুসহ দগ্ধ হয়েছে ৯ জন। এদের অবস্থা গুরুতর।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ইয়ারব্বি নামের বাসে অবরোধকারীরা এ বোমা হামলা চালায়। এতে বাসটি সম্পূর্ণভাবে ভস্মিভুত হয়েছে।

এ ঘটনায় দগ্ধরা হলেন- রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মকবুল হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী আনোয়ারা (৪০), তানোরের দেবীপুর এলাকার নাজমা (৩৫), ফারজানা (৫), ইলামদহী এলাকার জুলেখা (৩০), আশরাফ (৩৭), আছিয়া (৭), আয়েনউদ্দিন (৩৫)। অপর একজনের নাম পাওয়া যায়নি। তাকে তাৎক্ষণিক রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা চলন্তবাসে পেট্রোলবোমা ছুঁড়লে বাসে আগুন ধরে যায়। পরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা আসার আগেই বাসটি ভস্মিভুত হয়। এ ঘটনায় দগ্ধদের রাতেই তানোরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে রাজশাহীর পবায় যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুন দিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক হয়েছে শিবিরের দুই কর্মী। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার তেঘর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাস থেকে নামতে গিয়ে এক যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। আটক দুই শিবির কর্মী মশিউর রহমান ও আব্দুল আওয়াল। এদের বাড়ি পবা মহানন্দাখালি গ্রামে। এরা দুইজনই শিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় তানোর থেকে ‘ইমন পরিবহন’ নামে একটি বাস রাজশাহীর উদ্দেশ্যে আসে। ওই বাসে তানোর এলাকায় যাত্রীবেসে তিন যুবক উঠে। বাসটি পবার তেঘর এলাকায় আসলে ওই তিন যাত্রী গাড়ির ওপর গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরে বাসের যাত্রী ও এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে দুই অগ্নিসংযোগকারী শিবির কর্মীকে আটক করে গণধোলায় দেয়। এতে তাদের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। তবে অপরজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় জনতার হাত থেকে তাদের রক্ষা করে। ঘটনাস্থল থেকে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান  জানান, দুই জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হবে। তিনি জানান, বিক্ষুদ্ধ মানুষের পিটুনিতে তাদের হাত-পা ভেঙে গেছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই