রাজধানীতে ৩ নবজাতকসহ ৪ লাশ

জন্মের পর নবজাতকটিকে ভর্তি করা হয়েছিল রাজধানীর ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে। শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যায় ভুগছিল ছেলে শিশুটি। জসিম ও শিল্পী নামে দুজন বাবা-মা পরিচয়ে তাকে নিয়ে যায় হাসপাতালে। সেখানে শিশুটির পরিচর্যাও করেন তারা। তবে কিছুদিন পরই ওই সন্তানকে রেখে ‘পালিয়ে’ যান কথিত দম্পতি। এরপর আর শিশুটির কোনো স্বজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালে নার্সদের পরিচর্যায় শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ‘পালালো’ সেই নবজাতকও। এই পলায়ন কথিত বাবা-মার মতো নয়, না ফেরার দেশে; চিরদিনের জন্য। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তার বয়স হয়েছিল ৪১ দিন। হতভাগ্য শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শুক্রবার তার লাশ ময়নাতদেন্তর জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকার একটি বাসা থেকে ৫ দিনের এক ছেলে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কাওসার নামের ওই শিশুটি তার বাবার অবহেলায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছে বলে অভিযোগ করছেন মা। এ দুই শিশুর লাশও ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার ভাটারার নূরের চালার ইদ্রিস আলী কবরস্থান থেকে এক ছেলে নবজাতকের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাত-পরিচয়ে ওই শিশুটির মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।

ধানমণ্ডি থানার এসআই রিপন কুমার সাহা বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে ধানমণ্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে ৪১ দিন বয়সের শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই নবজাতককে গত ২৫ জানুয়ারি ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন জসিম ও শিল্পী নামে দু’জন। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী এবং শিশুটির তাদের সন্তান বলে দাবি করেন। তাদের বাসা ৮৮/৩ সানারপাড় বলে জানান। তাদের ছেলে সন্তানটি শ্বাসকস্টসহ নানা সমস্যায় ভুগছিল। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে তার চিকিৎসা করা হচ্ছিল।

জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়, প্রায় তিন সপ্তাহ তারা শিশুটিকে দেখাশোনা করার পর হঠাৎ কোথাও চলে যান সেই দম্পতি। তখন থেকে হাসপাতালের নার্সরা শিশুটির দেখাশোনা করছিল। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই বাবা-মাসহ শিশুটির কোনো স্বজনের খোঁজ পায়নি। চিকিৎসাধীন শিশুটি গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায়। পরে পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে।

এদিকে মোহাম্মদপুর থানার এসআই মেসবাহ উদ্দিন বলেন, গত বুধবার রাতে মোহাম্মদপুর কাটাসুর গলির ৬/১০/এ নম্বর বাসা থেকে কাওসার নামে পাঁচ দিনের এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুর মা কুমকুম অভিযোগ করেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। শারীরিক অসুস্থার কারণে চিকিৎসকরা ছেলেটিকে এনআইসিতে রাখার পরামর্শ দেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা বলে তার স্বামী সাজ্জাদ তাকে মোহাম্মদপুরের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটির মৃত্যু হয়। স্বামীর অসহযোগিতার কারণেই তার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

অন্যদিকে ভাটারা থানার এসআই শ্রীদাম চন্দ্র রায় বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ভাটারার পশ্চিম নূরেরচালা এলাকার ইদ্রিসের কবরস্থান থেকে দুই দিন বয়সী এক নবজাতক ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে একাধিক ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।’

ডেমরায় যুবকের লাশ
ডেমরা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) স্নেহাশীষ রায় বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ডেমরার বামৈল এলাকায় ডিএনডি’র পানি নিস্কাশন খাল থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের (২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দুই-তিন দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরনে ছিল ধূসর রঙের জিন্স প্যান্ট। তবে তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। জানা গেছে, মৃত যুবক ওই এলাকায় গত দেড় বছর ধরে ভাঙ্গারী মালামাল সংগ্রহ করে আসছে।’



মন্তব্য চালু নেই