রাজধানীর বারগুলোয় রাতের বেলায় কী হচ্ছে?

রাজধানীতে সরকার অনুমোদিত বারগুলোতে চলছে চরম অনিয়ম। অভিযোগ আছে, অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স নিয়ে কিছু মালিক তাদের বারগুলোকে ‘ড্যান্স’ বারে পরিণত করেছেন। আবার রেস্তোঁরা বা বাড়িতেই বার বানিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করছে, অর্থলোভী কিছু ব্যবসায়ী।

আর এসব তথ্য ওঠে এসেছে মাদকের অন্ধকার জগৎ নিয়ে আরটিভির একটি প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকার অনুমোদিত রাজধানীর একটি বার। এখানে নাচ-গানের অনুমতি না থাকলেও তা হরদম চলে। রাত যত গভীর হয় মদের সঙ্গে নাচ-গানের লোভে গ্রাহকও বাড়তে থাকে। দেশি-বিদেশি লিকারের সঙ্গে সস্তায় বিকোচ্ছে যৌনতা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান, বনানী, উত্তরা, নিকুঞ্জ এলাকায় নামে-বেনামে গড়ে উঠেছে অনেক বার। এসব বারে যা হয়, তা দেখে অনেকেরই পিলে চমকে যেতে পারে। এদের কারো কারো এলকোহল বিক্রির লাইসেন্স থাকলেও কারো মোটেই নেই।

বারের লাইসেন্স আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কর্মচারী বলেন, এদের ব্যাপারটা আলাদা। উচ্চপদস্থ যারা আছে, এসি-ডিসি ও সার্কেল বন্ধু-বান্ধব যারা আছে সবাই আসে এবং খাওয়া দাওয়া করে যায়। এদের সিস্টেম আলাদা।

সরকার অনুমোদিত মগবাজারের বারটি রাত ১১ টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা। অথচ প্রায় সবসময় নিয়ম অমান্য করে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। সেখানে কি কি আছে, জিজ্ঞাসা করলে বিক্রেতা বলেন, মদ না বিয়ার। বিয়ার কথা বলতেই ওই বিক্রেতা জানান, বিয়ার শুধু এটলাস আছে। ব্ল্যাক ডেভিল শেষ হয়ে গেছে। আরও জানান মদের মধ্যে রয়েছে ভতকা, হুইস্কি, ব্র্যান্ডি।

রাজধানীর রূপসী বাংলার উল্টো দিকে প্রসিদ্ধ দুটি বার। অথচ অভিযোগ আছে, এখানে আশেপাশের নির্মাণাধীন বাড়ির পাহারাদারও মদের ব্যবসা করেন। সেখানে কি কি আছে জানতে চাইলে এমনি একজন পাহারাদার বলেন, রয়েল টাচ ও এটলাস আছে। প্রতিটার দাম ৪০০ টাকা করে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গুলশান-১ এর নির্মাণাধীন ভবনে ভাড়া নিয়ে চলছে ডিজে পার্টি। ষোলকলা পূর্ণ করতে যোগান দেয়া হয় বিভিন্ন ধরনের মাদক।

সেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, হয়তো বা আমি নাম বলব না। অনেকেই চিনে অনেকেই জানে, যারা দেখতেছে তারা সবাই জানে কেন এসব চলছে। অনেক অ্যামেচার মডেল নিয়া অথবা আপকামিং মডেলদের নিয়ে কি করতেছে। এরচেয়ে বড় ব্যাপার হলো তাদের দিয়ে ব্যবসা করছে এখানকার অর্গানাইজাররা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েটার, সিকিউরিটি গার্ডরা হয়ে উঠেন বারের মালিক। সেখানে এমনি এক বার কর্মচারীকে মোবাইল ফোনে বলতে শোনা গেল, গান-টান কই তোমাদের। মেয়ে-টেয়ে কই? তাড়াতাড়ি পাঠাও। খুব বেশি সময় নাই হাতে আমাদের।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, মাফিয়া চক্র যারা তারা অনেক বেশি শক্তিশালী, অনেক বেশি সাফিস্টিকেটেড। তারা আরও বেশি এডভান্স চিন্তা-ভাবনা করে, তারা এডভান্স টেকনোলজি ব্যবহার করে। এ ধরণের অনুষ্ঠান আরও বেশি বেশি হয়, আপনারা যদি এ সমস্ত বিষয় আমাদের নজরে আনেন তাহলে আমরা দ্রুত সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।



মন্তব্য চালু নেই