রাজনীতি না করেও রাজনীতিবিদদের কাছে তারা প্রিয়

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে দলনিরপেক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন শতাধিক ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে ২৭টি রাজনৈতিক দল। শতাধিক এ নামের মধ্যে প্রায় মিল রয়েছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত নাম থেকে ২০ জনকে বাছাই করেছে সার্চ কমিটি। এসব ব্যক্তি রাজনীতিবিদদের কাছে প্রিয় ও গ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদিন মালিক বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো যাদের নাম প্রস্তাব করেছেন তারা অবশ্যই সমাজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। রাজনীতিবিদদের কাছে এসব ব্যক্তি গ্রহণযোগ্য বলেই তাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আর যাদের নিয়ে ইসি গঠন করা হবে তাদের সৎ, দক্ষ, গ্রহণযোগ্য, দলনিরপেক্ষ, সাহসী ও যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। তিনি বলেন, যে দলের পক্ষ থেকে যাদের নাম ঘোষণা করা হবে, তাদের সে দলের সমর্থক বলে অভিযোগ দেয়া হতে পারে। এজন্য যাদের নাম সুপারিশ করা হবে তাদের ছাত্রজীবন, কর্মজীবন কিংবা এখন কোনো রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত কি না, সেটা দেখতে হবে। এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে তারা কোনো দলের পদে ছিলেন না এবং নির্বাচনের জন্য কোনো দলের মনোনয়ন চাননি। পেশাগত কোনো সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত নন।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য প্রায় শতাধিক ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে। আমার জানামতে, প্রস্তাবিত ব্যক্তিরা কেউই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তারা সব দলের কাছেই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু নাম ঘোষণার পর যে দলের পক্ষ থেকে যার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তাকে সে দলের সমর্থক বলা হতে পারে। এজন্য সার্চ কমিটিকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

বিশিষ্টজনরা আরো বলেছেন, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। যেসব ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তারা সমাজে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও প্রিয় হলেও তাদের নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ ২৭টি রাজনৈতিক দল প্রায় শতাধিক ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে। এতে মাত্র পাঁচজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে। বাকিরা নানা কারণে বাদ পড়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ ২৭টি রাজনৈতিক দল প্রায় শতাধিক ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন- নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্তি সচিব জেসমিন টুলি। জেসমিন টুলি গত ২৫ অক্টোবর অবসরে গেছেন। জেসমিন টুলি শুধু দেশেই নন, দেশের বাইরে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন নারীর নির্বাচনী দক্ষতা বিষয়ে তাকে নিয়ে ইউএনডিপি একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করেছে।

সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষক ড. তোফয়েল আহমেদ। তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন। সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ, সাবেক মুখ্য সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, সাবেক মুখ্য সচিব এমএ করিম, সাবেক সচিব মঞ্জুরুল হোসেন, সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) আ ল ম ফজলুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক এবং পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জেড এম তাহমিদা বেগম। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. সাদাত হুসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসাইনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই