রাজনের বাড়িতে উঠছে দালান, নগদ অর্ধকোটি ছাড়িয়েছে

ব্যাপক আলোচিত কিশোর শেখ সামিউল আলম রাজনকে চোর সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যার পর তার পরিবারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দেশ-বিদেশের অসংখ্য শুভাকাঙ্খী।

এই পাশবিক ঘটনায় মর্মাহত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দেশ- বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরাও।

রাজনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বেশ কিছু সংস্থা প্রকাশ্যে রাজনের পরিবারকে অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে।এর বাইরেও অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিজেদের সাধ্যমতো রাজনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

তাদের ধারণা, অনুদানের এ টাকা এরই মধ্যে কম-বেশী অর্ধ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

রাজনের বাবা শেখ আজিজুল আলমের ফুফাতো ভাই আবদুল মালিক জানান, প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে অনুদানের টাকা রাজনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অনুদানের টাকাগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য এলাকাবাসীর উদ্যোগে রাজনের বাবা শেখ আজিজুল আলম ও মা লুবনা বেগমের নামে বুধবার সকালে ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনের পরিবারের কয়েকজন সদস্য জানান, রাজনের পরিবারের হাতে সর্বশেষ সুনামগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশন-ইউকে অনুদান হিসেবে এক লাখ টাকার চেক রাজনের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিয়েছেন।

এর পূর্বে রাজনের পরিবারের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এক লাখ টাকা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এক লাখ টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৫০ হাজার টাকা, সিলেট জেলা পরিষদ পাঁচ লাখ টাকা, জেলা প্রশাসন এক লাখ ২০ হাজার টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করেছে।

তাছাড়া একটি সমাজকল্যাণ মূলক সংস্থা ১২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে রাজনের ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে।

স্থানীয় ও স্বজনদের দেয়া সূত্রে রাজন হত্যাকান্ডের পর রাজনের পরিবার অর্ধ কোটি টাকার মতো অনুদান পেয়েছেন, সেই টাকা কীভাবে কাজে লাগাবেন?

এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজনের বাবা শেখ আজিজুল আলম বলেন, রাজনের মা ও আমার নামে পূবালী ব্যাংক তেমুখী শাখা এবং প্রাইম ব্যাংক সুবিদবাজার শাখায় দুটি ফিক্স ডিপোজিট করব।

এ ছাড়া আমাদের বাড়ির পাশের একটি জমি আগে আমি বিক্রি করে দিয়েছিলাম, এখন সেটি আবার আমি কিনতে চাচ্ছি। ওই জমিটির বর্তমান মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা।

রাজনের বাবা আরো জানান, বিভিন্ন মানুষ অনুদান দিচ্ছে। লন্ডনের একজন কাউন্সিলর ওয়ালিউর রহমান আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, দেশে ফিরে পাঁচ হাজার পাউন্ড অনুদান দেবেন। লন্ডন প্রবাসী আঙ্গুর মিয়া নামের একজন সেখানে কিছু অর্থ সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন। সেই টাকাও তিনি পরিবারকে দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া একজন প্রবাসী আমাদের থাকার ঘরটি দালান করে দিচ্ছেন। এ কাজ শুরু হয়েছে।

তবে অনুদানের এসব টাকা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন খাতে বেশ কিছু টাকা খরচ হচ্ছে বলেও জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে রাজন মারা যাওয়ার তিনদিন পর থেকে প্যান্ডেল, মাইক ও চেয়ার বাড়িতে ভাড়া আনা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষকে রং চা দিয়ে আপ্যায়ন করা হচ্ছে। এ জন্য কিছু টাকা খরচ হচ্ছে।

এ দিকে রাজনের বাবার নিরাপত্তার জন্য জালালাবাদ পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে।

এসএমপির অতিরিক্ত কমিশনার রোকন উদ্দিন জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে রাজনের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে।ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই