রাণীনগরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু না হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রায় পৌঁনে দুই লাখ মানুষের চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৯৮৪ইং সালে স্থাপিত হয়। দীর্ঘদিন থেকে চিকিৎসক ও ওষুধ সংকটের কারণে রোগীরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হলেও বর্তমানে চিকিৎসক সংকট নেই। যেসব চিকিৎসক আছেন তারা রোগীদের যথারীতি চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবার মান আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১০ইং সালে স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ১৯ শয্যা বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে।

২০১২ইং সালের মার্চ মাসে নির্মাণকৃত ভবনটি হন্তান্তর করা হলেও প্রায় ৫বছর ধরে মোট ৫০ শয্যার হাসপাতালটি আজও পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু না হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভর্তিকৃত রোগীরা চাহিদা মত শয্যা না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা সেবা নিতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা পরিষদ স্থাপিত হওয়ার সাথে ১৯৮৪ইং সালে সাবেক এরশাদ সরকারের আমলে উপজেলা সদরের পশ্চিম বালুভরা মৌজায় ৬.২৫একর জমি সরকার ক্রয় করে প্রথমে ৩১শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সঠিক ভাবে প্রদান করার লক্ষ্যে স্থাণীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি’র একান্ত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নত করার লক্ষ্যে ১৯শয্যা বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষে ২০১২ইং সালে হস্তান্তর হলেও ওই ওয়ার্ডের জনবল, ওষুধ, রোগীদের খাদ্য সহ অন্যান্য উপকরণের সংকটের কারণে ৫বছর ধরে নির্দিষ্ট বরাদ্দ না পাওয়ায় আত্যাধুনিক ভবনের কার্যক্রম চালু করতে পারছেন না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। তবে আশার বাণী চলতি বছরে জুন মাসের দিকে দেশের অন্যান্য উপজেলার মত রাণীনগর হাসপাতালেও রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রতিদিন প্রায় বর্হি বিভাগে ৩শ’ ৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। এর মধ্য থেকে প্রায় ১৪ জনের মত রোগী সুচিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়। মাঝে মধ্যেই প্রকট আকারে শয্যা ও ওষুধ সংকটের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খায়। অনেক সময় মেঝে ও বারান্দায় ফেলে চিকিৎসা দিতে হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনী জনবল এবং রোগীদের খাদ্য সরবরাহের অনুমোদন না থাকাই এই ভবনের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে আন্তঃবিভাগ রোগীদের দূর্ভোগ থেকেই যাচ্ছে। ওষুধ সংকটের কারণে রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করাতে হয়। এতে গরিব রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধ কেনে খেতে কষ্ট সাদ্য হয়ে দাঁড়ায়।

উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপরেশন থিয়েটার থাকলেও অযত্ন আর অবহেলায় তা পরিত্যাক্ত হয়ে আছে। একটি মাত্র পুরাতন এক্সরে মেশিন রয়েছে। তাও অনেক সময় বিকল হয়ে যাওয়ায় এবং ফ্লিম, কেমিক্যাল সরবরাহ না থাকাই রোগীদের বাধ্য হয়ে নওগাঁ জেলা সদরে সরকারি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হয়। জনগণের চিকিৎসার স্বার্থে স্থাণীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে এই এক্সরে মেশিন সচল রাখা হয়েছে। হাসপাতালের ভিতরে বড় মাপের মানসম্পূর্ণ স্টোর রুম না থাকাই নতুন ভবনের আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী অপরেশন থিয়েটার সহ যত্রতত্র মালসামানা ফেলে রাখতে হয়।

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার এসএম নজমুল আহসান জানান, চিকিৎসক মনজুরীকৃত পদ অনুযায়ী থাকলেও কিছু তৃতীয় শ্রেণী ও ওর্য়াড বয় সহ কিছু অবকাঠামোগত সমস্যা থাকায় ১৯শয্যা ওই ভবনটি চালু করা যাচ্ছে না। তারপরও রাণীনগর বাসির যথাযথ চিকিৎসা দিতে আমাদের পেশাদ্বারিত্বের কোন ঘার্তি নেই। প্রয়োজনী অসুবিধা গুলো সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।#



মন্তব্য চালু নেই