রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চূর্ণ-বিচূর্ণ হল জার্জিসের পরিবারের স্বপ্ন

ইয়াজিম ইসলাম পলাশ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: সকাল ৭টা। আর ততক্ষণে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে অজানা উদ্দেশ্যে পাড়ি জার্জিসের। আর সে কথাটি জানাতে এক মায়ের কাছে ফোন দেওয়া। আর ফোন রিসিভ করেই কথাটি জানাতেই নির্বাক জার্জিসের মা। যেন আকাশ থেকে উল্কাপিন্ড এসে মার বুকে পড়েছে।

কাকডাকা সকালটি মার কাছে মনে হল বিষাদের চাদরে ঢাকা। সব কিছুই আগের মত থাকলেও মা যেন তার একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে ফেলেছে। বুঝতে আর বাকি থাকলো না কারোর। কথাগুলো বলছিলেন জার্জিসের অন্তিম মুর্হূতে পাশে থাকা দীর্ঘদিনের সহপাঠী অনুজ কুমার ম-ল।

গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত রাবি সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জার্জিস হোসেন মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জার্জিস বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক (৪৮২) শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার যুগস্বি গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে। দুই ভাই বোনদের মধ্যে সে ছোট।

সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি জানান, ‘৮ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর জার্জিসের আজ মৃত্য হয়।বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মজসিদ প্রাঙ্গনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।’

সহপাঠীরা জানায়, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে গাছ থেকে ডাব পাড়ার জন্য গাছে ওঠেন জার্জিস। এ সময় গাছ থেকে পড়ে গেলে তার দুই পা ভেঙ্গে যায় এবং মাথায় বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে জরুরি অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে জার্জিস আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।

জার্জিসের দীর্ঘ দিনের সহপাঠী অনুজ কুমার মন্ডল ভারাক্রন্ত হৃদয়ে বলেন, আমরা এক সঙ্গে প্রথম বর্ষে ভর্তি হই। সে ছিল সহজ-সরল ও শান্ত স্বভাবের। বিভাগের যে কোনো প্রোগামে সে সক্রিয় ভূমিকা পালন করত। সে ছিল বিভাগের সকলের প্রিয় একজন। সে ছিল তার পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। আমরা তার মৃত্যু কোনো ভাবেই মানতে পারছি না।’

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ৪ টায় তার নিজ গ্রাম দুর্গাপুর উপজেলার যুগস্বিতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে।

জার্জিসের মৃত্যতে বিভাগের চেয়ারম্যান ছাদেকুল আরেফিন মাতিন ও বিভাগের শিক্ষাক-শিক্ষার্থীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই