রামপাল আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই

রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

‘রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বিষয়ক সর্বশেষ পরিস্থিতি : নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া’ প্রকাশার্থে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে ‘সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি’।

জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে লিখিত বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রামপাল বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি তার বক্তব্যে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকে ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, মনগড়া, নেতিবাচক ও ভীতি সৃষ্টিকর বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা নাগরিকদের আন্দোলনের সঙ্গে এ বিষয়ে বিএনপির সাম্প্রতিক অবস্থানকে সম্পৃক্ত করেছেন।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই আমাদের এ আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। সব সময়ই ক্ষমতাসীন সরকার তাদের কার্যক্রমের সমালোচনাকে ঢালাওভাবে ষড়যন্ত্রমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে। কানসাট এবং ফুলবাড়ীর সফল আন্দোলন প্রমাণ করেছে ক্ষমতাসীনদের এমন দোষারোপ সঠিক নয়, ভ্রান্ত।’

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘আমরা নিশ্চিত সুন্দরবন রক্ষায় আমাদের আন্দোলনের বিজয়ই প্রমাণ করবে যে ক্ষমতার জোরে অগ্রহণযোগ্য উন্নয়ন চাপিয়ে দেয়া যায় না এবং এমন চেষ্টা সফলও হয় না। আজকের ফারাক্কা ব্যারাজ পরিস্থিতি তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।`

সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সুন্দরবনকে রক্ষা করা এবং যে কোনো ঝুঁকি থেকে এ বিরল প্রতিবেশ ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখা। শুধু পরিবেশগত বিবেচনায় নয়, অর্থনৈতিক বিবেচনাতেও রামপাল প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হবে।’

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ‘ইতোমধ্যে সম্ভাব্য বিদেশি অর্থায়নকারী দুটি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অর্থায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিলে পরবর্তীতে ভারতে এক্সিম ব্যাংক অর্থায়নের জন্য এগিয়ে আসে। এসব বিষয়ে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত অস্পষ্ট ও অস্বচ্ছ।

রামপালের স্বপক্ষে অর্থনৈতিক যুক্তি দেখাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী রামপালে নিযুক্ত কোম্পানি সিএসআর বাবদ ৩০ কোটি টাকা জমা দেবে বলে উল্লেখ করেছেন। অমূল্য সুন্দরবনের বিপরীতে এ ৩০ কোটি টাকা অতি নগণ্য।’

সংবাদ সম্মেলনে ‘কয়েকজন আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানীর করা রামপালসহ কয়লাজনিত সম্ভাব্য দূষণের গবেষণাপত্রের সারাংশ মতামত’ তুলে ধরা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অ্ধ্যাপক এম এম আকাশ, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) আবদুল মতিন, শরীফ জামিল, পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই