রামেকে ৭ মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ১১৯ জন নিহত

দেশে সবকিছুর দামই বাড়তি শুধু মানুষের জীবন এখন সবচেয়ে সস্তা। সড়ক দূর্ঘটনা এখন খুবই সাধারণ ব্যাপার। প্রতিদিন টেলিভিশন খুলেই দেখতে হয় কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালে এ বছরের জানুয়ারী থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে বিভিন্ন স্থানে সড়ক দূর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে জানুয়ারী মাসে ৩৬ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫ জন, মার্চ মাসে ৩৬ জন, এপ্রিল মাসে ১৭ জন, মে মাসে ৩২ জন, জুন মাসে ২৮ জন ও জুলাই মাসে ২২ জন।

রামেক হাসপাতালের তথ্য অনুসন্ধান কেন্দ্রের অফিস সহকারি নাজিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ সব দুর্ঘটনায় অর্ধশতর বেশি আহত হয়েছেন। তারা রামেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। আর আহতরা রামেকের ৮,৩০,৩১ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা মোটরসাইকেল ও ভুটভুটির সাথে।

এসব দুর্ঘটনা রাস্তা পাড়াপাড়, মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিয়ন্ত হারিয়ে ধাক্কা দেয়া ইত্যাদি। এ দুর্ঘটনায় বেশির ভাগ মানুষের হাত-পা ভেঙ্গেয় শেষ নয় শরিরের বিভিন্ন স্থানে খতের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে, ঈদের পরে দিন আটো রিক্সা ও মোটরসাইকেলে সংঘর্ষে আহত রাহাতের স্বজন নিশা বলেন, রাস্তা ঘাটে যে ভাবে গাড়ি গুলো চলছে তাকে যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর মোটরসাইকেল আরো বেপোরোয়া ভাবে চলে।

আমার মামা আর রাহাত পার্কে থেকে বাড়ি আশার পথে একটি মোটরসাইকেল তাদের গাড়িতে ধাক্কা দেয় এতে রাহাত আটো থেকে ছিটকে পরে পা ভেঙ্গে যায়। ৯- ১০ দিন হলো এখোনো হাটতে পারে না। পায়ের ছবি তোলতে নিয়ে এসেছি, দেখি কি হয়।

ঈদের আগে ও পরে রাজশাহীর বানেশ্বর, পুঠিয়া, হরিয়ানের কুখন্ডি খড়খড়ি, মোহনপুরের কেশরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়। গত ১৫ জুলাই বুধবার মতিহারের খড়খড়ি এলাকার কুখন্ডি বাইপাসে নওদাপাড়াগামী একটি ভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। এতে জয়নাল নামে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চারজন।

একই দিনে সকাল সাড়ে ৭টায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে ট্রাক-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে পিকআপের দু’যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। নিহতরা হলেন, নাচোল উপজেলা সদরের হোসেন আলীর ছেলে নাজমুল হক (৪৫) ও নাচোল উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান (৪০)।

ঈদের দিন পুঠিয়ার শিবপুরের সড়ক দুর্ঘটনায় সাকের আলী (৪০) নিহত হন। তার পরের দিন মোটরসাইকেল ও পিকআপের সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী মিজান (২৫) নিহত হন। একই দিনে মোটরসাইকেল ও পিকআপের সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নিলয় (১৬) নিহত হন। তিনি ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মোহনপুরের কেশরহাট এলাকায় ভটভটি ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, মোহনপুর উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে ইয়াকুব আলী সবর (৪৫), মহনপুর উপজেলার কেশরহাট ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০) এবং মোহনপুর উপজেলার আমড়াইল গ্রামের শমসের হোসেনের ছেলে আকবর হোসেন। পরে আহতদের রামেক হাসপাতালসহ স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সহকারী পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক এএইচএম মনজুর মোর্শদ বলেন, বেশির ভাগ দূর্ঘটনা ভুটভুটি আর মোটরসাইকেলর জন্য হয়ে থাকে। যারা ভুটভুটি চালায় তারা বেশির ভাগ জমিতে কৃষি কাজ করে। যখন জমিতে কৃষি কাজ থাকে না তখন তারা জীবিকার তাগিতে এ সকল গাড়ি গুলো চালায়। আর মোটরসাইকেল অপ্রাপ্ত বয়েসের ছেলেরা বেশি চালায়। তারা মোটরসাইকল ও রাস্তা সমন্ধে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দূরর্ঘটনা ঘটে যায়।

তিনি আরো বলেন, আর রাস্তায় যে সকল গাড়ি চলে তার বেশির ভাগ ফিটন্সে বিহীন। সে গাড়ি গুলোর জন্য আরো বেশি দূরর্ঘটনা ঘটে। আর আমাদের নগরীতে অনেক আটোরিক্সা বেড়েছে। তার যেখানে সেখানে রাস্তায় থেমে যায়। এতে করে যানযট বেশি হয়। আর যানযট নিরোশনে আমাদের লোকজন সব সময় মাঠে কাজ করছে। আগামী পহেলা আগষ্ট থেকে হাইওয়েতে কোন ধরনের ভুটভুটি, আটো ইত্যাদি গাড়ি চলতে পারবেনা। তখন রাজশাহী থেকে ঢাকা যেতে আমাদের সময় বাচবে ১ ঘন্টার মত । তখন রাস্তা ফাকা থাকবে গাড়ি খুব তারাতারি যাবে।



মন্তব্য চালু নেই