রাশিয়ার তরুণদের মাঝে পুতিনই হিরো, কিন্তু কেন?

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার ২৫ বছর পরও রাশিয়ার স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন দেশটির ক্ষমতাশালী প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর তিনি দেশটির তরুণ সমাজের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয়। কিন্তু কেন তার এ জনপ্রিয়তা? এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।
রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির অফিসার ছিলেন পুতিন। পরবর্তীতে তিনি রাজনীতিতেও বেশ ভালো করেন। পুতিন ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ ও ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছেন। এ ছাড়াও, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড রাশিয়া দলের সভাপতি এবং রাশিয়া ও বেলারুশের মন্ত্রিসভার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ মেয়াদে ২০১২ সাল থেকে তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শিক্ষাজীবনেও উজ্জ্বল পুতিন। ১৯৭০ সালে তিনি লেনিনগ্রাদ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৫ সালে ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে পুতিন মস্কোর কেজিবি স্কুল নম্বর ১ এ পড়াশুনা করেন। পরে কেজিবির কর্মকর্তা হন।
অল্প বয়সে পুতিন বেশ কয়েকবার জুডো এবং মার্শাল আর্ট খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। রাশিয়ার ক্রীড়া উন্নয়নেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন, যা তার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাশিয়ার বিভিন্ন স্থানে পুতিনের জনপ্রিয়তা দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন, তিনি রাশিয়ার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এনেছেন। এ ছাড়াও, তিনি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন চেচনিয়ায় দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধের মাধ্যমে অঙ্গরাজ্যগুলোর অখণ্ডতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন। পুতিনের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন রাশিয়ার যথেষ্ট অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটে।

অনেকেই অবশ্য পুতিনের রাষ্ট্রপতির পদ ধরে রাখাকে স্বৈরশাসনের সঙ্গে তুলনা করেন। মূলত পশ্চিমারা এ দাবি করে। অনেক পশ্চিমাই তাকে অগণতান্ত্রিক হিসেবে মনে করে। কিন্তু নিজ দেশের প্রেক্ষাপটে ও রুশ সমাজব্যবস্থায় তিনি দারুণ জনপ্রিয়।
রাশিয়ার সামরিক শক্তিকেও নতুন করে সাজিয়েছেন পুতিন। মাত্র ১০ বছর বয়সেও এখন শিশুরা সামরিক প্রশিক্ষণ কিংবা অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার শিখতে পারে। আর এটি তাদের উৎসাহ যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

পুতিনের রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির পদ অধিকার করাকে অনেক রাশিয়ানই যেন পুরনো সোভিয়েত আমলের স্বাদ পাচ্ছেন। আর তিনি যে সব ক্ষেত্রে উন্নতির আশা দেখিয়েছেন সে সব ক্ষেত্র মোটেই ছোট নয়। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট ও সংঘাতও তার জনপ্রিয়তা কমায়নি।
এ ছাড়া রাশিয়ায় পুতিনের জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, চাকরি বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা ও পুতিনের কর্মঠ ভূমিকা।



মন্তব্য চালু নেই