রিজার্ভ চুরির ৬৬ মিলিয়ন ডলারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৬৬ মিলিয়ন ডলারের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত মাত্র ১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। আরও ১৬ মিলিয়ন ডলার কিছুদিনের মধ্যে ফেরত পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে বাকী অর্থ কিভাবে আসবে, আদৌ আসবে কিনা সে বিষয়ে কিছুই জানেন না সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয় সংসদ ভবনে রবিবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। কমিটি জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ চুরির ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছে।

বৈঠকে ব্যাংক রিজার্ভ ও আমানতের নিরাপত্তা এবং জালিয়াতি প্রতিরোধে করণীয়, বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ইন্টারেস্ট রেট স্প্রিডের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়।

কমিটির সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির সদস্যরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান।

এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যে ফেরত পাওয়া গেছে এবং আরো প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার ফেরত পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে। বাকি অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

কমিটি চুরির জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে দেশের জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ ফেরত আনার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ঘটনায় জড়িতদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার জোর সুপারিশ করে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার যাতে পূনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এর আগে গত ১০ মে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও রিজার্ভ চুরির বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকেও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার নেপথ্যে থেকে কারা কলকাটি নেড়েছে তাদের খুঁজে বের করার তাগিদ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে চুরির অর্থ শুধু ফেরত আনা নয়, জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণেরও তাগিদ দেয় ওই কমিটি।

এ দিকে বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রায় পরিচালিত অফশোর ব্যাংকিং নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অফশোর ব্যাংকিংয়ের সার্বিক ঝুঁকি হ্রাস এবং তুলনামূলকভাবে মুক্ত ও সহজ অফশোর ব্যাংকিং সুবিধার সার্বিক সুফল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা সময়োপযোগী করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

কমিটি সভাপতি ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটি সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, টিপু মুন্সি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, আখতার জাহান প্রমুখ।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই