রোজ রাতে বিছানায় সাপ নিয়ে শুতেন এই তরুণী! তার পরিণাম কী হল, ভাবতেও পারবেন না

মানুষের কত বিচিত্র রকমের শখই যে থাকে। কিছু মানুষের যেমন শখ হিংস্র প্রাণীদের নিজেদের পোষ্য বানানো। তেমনই এক তরুণীর কাহিনি সম্প্রতি চাউর হয়েছে নেট-দুনিয়ায়, যিনি এক অজগর সাপকে নিজের পোষ্য করেছিলেন। এবং তাঁর এই শখের যে চরম মূল্য তিনি দিতে বসেছিলেন, তা জেনে শিউরে উঠেছেন সকলে। ঘটনাটি সত্য নাকি অসত্য, তা এখনও স্পষ্ট নয়, কিন্তু প্রাণীবিজ্ঞানীরা বলছেন, এমনটা ঘটা নিতান্ত অসম্ভবও নয়।

ভাইরাল হওয়া এই বৃত্তান্তের কেন্দ্রবিন্দু যে তরুণী, তিনি পুষেছিলেন একটি অজগর সাপ। সাপটি যখন নিতান্ত শিশু, তখনই এক ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংকচুয়ারি থেকে সাপটিকে নিয়ে এসে নিজের বাড়িতে প্রতিপালন শুরু করেন তিনি। এতই ভালবাসতেন তিনি সাপটিকে, যে এক মুহূর্তের জন্যও তাকে কাছছাড়া করতেন না। সেই ভালবাসার এক চরম প্রতিদান দিতে যে তৈরি হচ্ছে সেই পোষ্য, তা তখন তরুণীর কল্পনাতেও ছিল না।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাপটি যখন পূর্ণাবয়ব হয়ে ওঠে, তখন হঠাৎই এক দিন তরুণী খেয়াল করেন, অজগরটি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাকে খাওয়ানোর জন্য অনেক সাধ্যসাধনা করেন মেয়েটি, কিন্তু সাপ কিছু মুখে তুলতে নারাজ। দিনে দিনে সে কেমন যেন নিস্তেজ হয়ে আসতে থাকে। চিন্তান্বিত তরুণী তাকে এক প্রাণী বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। সেই বিশেষজ্ঞই তখন এক ভয়াবহ সত্য উদ্ঘাটিত করেন তরুণীর সামনে।
বিশেষজ্ঞ সাপটিকে যেমন পরীক্ষানিরীক্ষা করেন, তেমনই সাপটির সাম্প্রতিক গতিবিধি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন তরুণীকেও। তার পরেই বিশেষজ্ঞ জানান, সাপটি যে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, তা কোনও অসুস্থতার কারণে নয়। বরং এই ভাবে অজগর জাতীয় সাপেরা নিজেদের পেটের আয়তন বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু কেন পেটের আয়তন এ ভাবে বাড়াতে চাইছে সাপটি? বিশেষজ্ঞ জানান, কারণ, সাপটি এ বার বড় আকারের কোনও শিকারকে উদরস্থ করার পরিকল্পনা করছে। কোন শিকার? তরু‌ণীর এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞ উন্মোচিত করেন এক ভয়ঙ্কর সত্য। তিনি জানান, খোদ নিজের মালকিন ওই তরুণীকেই খাওয়ার পরিকল্পনা করছে অজগরটি। সেই কারণেই খাওয়া বন্ধ করে আস্ত এক জন মানবী গিলে খাওয়ার উপযোগী করে তুলছে নিজের শরীরকে। তরুণী ভয়ে কাঁটা হয়ে যান সেই কথা শুনে।

ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া এই কাহিনি এখানেই শেষ। বিশেষজ্ঞের কাছে চরম সত্যটি শোনার পরে তরুণী কী করলেন, তা আর জানানো হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই গল্পের কতটা সত্যি? তরুণীর নাম-ধাম যেহেতু উল্লেখ নেই কাহিনিতে, সেহেতু এর সত্যতা যাচাইও প্রায় অসম্ভব। কিন্তু সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞানী আর্থার মিলিচকে এই বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, সত্যিই পাইথন জাতীয় সাপেরা নিজেদের পেটের আয়তন বাড়ানোর জন্য খাওয়া বন্ধ রাখে কয়েক দিন।

কিন্তু তাদের পক্ষে ভবিষ্যতের কোনও শিকারের কথা ভেবে আগে থেকে খাওয়া বন্ধ রাখা কিঞ্চিৎ অস্বাভাবিক বলেই মনে হয়। তারা ইনস্টিংকট মেনে চলে। যখন খিদে পায়, তখন হাতের কাছে যে শিকারকে পায়, তাকেই গলাধঃকরণ করে। তবে প্রাণী জগতের সবকিছুই যে তাত্ত্বিক নিয়ম মেনে চলে না, এটাও মেনে নিচ্ছেন আর্থার। কাজেই ‘কাহিনি’ হিসেবে প্রচারিত এই ঘটনা ‘সত্য’ হওয়াও নিতান্ত অসম্ভব নয় বলেই মত আর্থারের।



মন্তব্য চালু নেই