লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছেন নন-ক্যাডার কর্মকর্তারা

অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলের প্রজ্ঞাপনে প্রশাসনের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছেন নন-ক্যাডার কর্মকর্তারা।

এ জন্য ৯ জানুয়ারি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে ৩৭টি নন-ক্যাডার দপ্তরের কর্মকর্তাদের গঠিত সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিতি সরকারি কর্মকর্তা পরিষদ (বাসসকপ)। এর মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে ওই সমাবেশ থেকে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে।

অবশ্য এর আগে আগামী রবিবার মন্ত্রিপরিষদ-সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে আবার লিখিতভাবে তাদের অভিযোগ ও দাবি জানাবে বাসসকপ।

ইতিমধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাদের পাঁচ দফা সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠনটি।

অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণার পর থেকে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রারম্ভিক বেতনবৈষম্য দূর করা তথা চাকরিতে প্রবেশে যথাক্রমে অষ্টম ও নবম গ্রেড প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল করে অভিন্ন অষ্টম গ্রেড প্রদান, সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল রাখাসহ ৫ দফা দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে বাসসকপ।

এসব কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়ার জন্য বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রশাসনের ৩৭টি নন-ক্যাডার দপ্তরের কর্মকর্তারা সমাবেশ করেন। সেখান থেকে পরে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবীর বিন আনোয়ার।

পাঁচ দফার অন্য দাবিগুলো হলো- সব নন-ক্যাডার কর্মকর্তার ক্ষেত্রে চাকরিজীবনে কমপক্ষে চারটি উচ্চতর বেতন ধাপ পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি; উপজেলা পরিষদের ক্ষমতায়নের নামে ইউএনওর কর্তৃত্ব সৃষ্টির অফিস স্মারক বাতিল করা; নিজস্ব সার্ভিস/বিভাগ বহির্ভূত সব ধরনের প্রেষণ প্রথা বাতিল করে স্ব স্ব বিভাগীয় দক্ষ-পেশাদার কর্মকর্তাদের পদোন্নতির মাধ্যমে সর্বোচ্চ পদ পূরণ করা এবং গৃহনির্মাণ ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫০ লাখ টাকা করা।

বাসসকপের মহাসচিব মো. জিন্নাত আলী বিশ্বাস বলেন, তাদের দাবিগুলোর বিষয়ে তাগাদা দিয়ে আগামী রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আবার লিখিতভাবে জানানো হবে।

এরপরও যদি দাবি মানা না হয়, তাহলে ৯ জানুয়ারির সমাবেশ থেকে লাগাতার আন্দোলনের কঠোর সর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান জিন্নাত আলী বিশ্বাস।

প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া স্মারকলিপিতে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের দাবিগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ক্যাডার নন-ক্যাডার সব প্রথম শ্রেণির চাকরির প্রবেশ পদে বেতন গ্রেডে এক ও অভিন্ন করা র্অথাৎ অষ্টম গ্রেড করা। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রবর্তিত চাকরিতে ১০টি বেতন ধাপ পুনঃপ্রবর্তন করা।

প্রথম শ্রেণির চাকরির চার বছর পূর্তিতে সপ্তম গ্রেড, পাঁচ বছর পূর্তিতে সিনিয়র স্কলে (ষষ্ঠ গ্রেড), ১০ (দশ) বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কলে (৫ম গ্রডে) এবং ১৫ বছর পূর্তিতে ৪র্থ গ্রেড প্রদান করা। একই পদে সর্বোচ্চ ৫ বছর থাকলে এবং পদোন্নতি প্রদান করা সম্ভব না হলে স্বযংক্রিয়ভাবে পরবর্তী উচ্চতর ধাপের বেতন স্কেল প্রদান করা।

একই ভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের বিদ্যমান দুটি টাইমস্কেল ও একটি সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখাসহ সমগ্র চাকরিজীবনে কমপক্ষে চারটি পরবর্তী উচ্চতর স্কলে/গ্রেড পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া।

উপজলো পর‌্যায়ে ১৬টি বিভাগীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি উত্তোলনে বিদ্যমান পদ্ধতি বহাল রাখাসহ নতুনভাবে জারিকৃত ইউএনওর কর্তৃত্ব সৃষ্টিকারী কালাকানুন অবিলম্বে বাতিল করা।

ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কাজের ধরন অনুযায়ী গুচ্ছ সার্ভিস সৃষ্টির মাধ্যমে ক্যাডার-ননক্যাডার কর্মকর্তাদরে মধ্যে বিরাজমান বৈষম্য দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

প্রেষণে নিয়োগ বন্ধের মাধ্যমে স্ব স্ব অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এবং দপ্তরে নিয়োগবিধি মোতাবেক নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নিশ্চিতর্পূবক বিভাগীয় কর্মকর্তার দ্বারা অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও দপ্তরের প্রধান পদসহ সব পদ পূরণ করা।



মন্তব্য চালু নেই