শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ হামলার আশঙ্কা!

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস আগামী শনিবার। আর স্বাধীনতা দিবসের আগেই বড় ধরনের হুমকি পেয়েছে সামরিক ও অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র।

ইসলামিক স্টেট বা আইএস এ হামলা করতে পারে। কারণ, তারা এ হামলার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইএ এবং এফবিআই জানিয়েছে, আইএস হামলা করতে পারে সেরকম আভাস পেয়েছেন তারা। যে কারণে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আইন শৃংখলা বাহিনী পুরো দেশকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে। বেশ কয়েকটি প্রদেশে নিরাপত্তা ব্যাপক জোরদার করা হয়েছে।

সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে, এ পরিপ্রেক্ষিতে লোকালয়, বাজার এবং স্থানীয় জনপদে, বিশেষ করে সন্দেহভাজন আইএস সমর্থকদের দেখা মাত্র পুলিশ ও বিশেষ বাহিনী গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। গোয়েন্দা বিভাগের ধারণা, আইএসকর্মীরা গোষ্ঠীবদ্ধভাবে চলাফেরা করে না। তারা বড় ধরনের হামলা করেই সে স্থান থেকে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আইএস যেন কোনভাবেই হামলা করতে না পারে এবং পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে এফবিআই। এ নিয়ে এফবিআইয়ের সন্ত্রাসবিরোধী পাল্টা হামলা ও প্রতিরোধ বিভাগ গত শুক্রবার এক বুলেটিন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:)কে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে কার্টুন আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আর এ কারণে আইএস এবং মুসলিম মৌলবাদীরা হামলা করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বিশেষ করে হোয়াইট হাউস এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোতে হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি) বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অতীতে যত হামলা হয়েছে তার থেকেও এ হামলা বড় ধরনের হতে পারে। আর এ কারণেই বিগত বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে।’

লস এঞ্চেলস পুলিশ বিভাগের প্রধান মাইকেল ডাউনিং বলেন,‘সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে, এ ব্যাপারে প্রাদেশিক সরকার বেশ সচেতন। সন্ত্রাসীদের প্রতি দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। বিশেষ করে আইএস বা অন্য যে কোন ধরণের মৌলবাদী যুক্তরাষ্ট্রে হামলা করতে পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক।’

যে কোন চরমপন্থী অথবা মৌলবাদীকে গ্রেফতার করতে কোন সমস্যা হবে না। এমনও আভাস দিয়েছে পুলিশ। মাইকেল ডাউনিং আরো বলেন,‘আইএসের সবাই এক সঙ্গে থাকে না।

গোষ্ঠীবদ্ধভাবে তারা চলাফেরা করে না। ফলে আইএসকর্মী ও সমর্থকদের চিনে বের করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।’

সিএনএন’র গবেষণা ও আইন বিশ্লেষক বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪৯ জন আইএসকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আইন শৃংখলা বাহিনী আগামী দু’দিনে বেশ কিছু আইএস সমর্থক ও কর্মীকে গ্রেফতার করবে।

মে মাসে টেক্সাসে মহানবী (সা:)কে নিয়ে কার্টুন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে মৌলবাদীদের হামলার শিকার হন এলটন সিম্পসন এবং নাদির সুফি। এ দু’জনকে মৌলবাদীরা হত্যা করে। জুনের গোড়ার দিকে উসামা রহিমকে খুন করে আইএসকর্মীরা।

নিরাপত্তা পর্ষদের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন,‘এফবিআই এবং প্রাদেশিক সরকারের পুলিশ প্রধানরা সন্ত্রাস দমনে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আইএস বা তালেবান হামলা প্রতিরোধে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরো বেশি গতিশীল করা হয়েছে।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটাই জোরদার করা হয়েছে, সেসব স্থানে হামলা করা সহজ নয়। প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দৃঢ় করা হয়েছে।

মাইকেল ডাউনিং বলেন,‘স্বাধীনতা দিবসে হামলা হতে পারে, জঙ্গী সংগঠন এ হামলা করতে পারে, এটা হচ্ছে প্রাথমিক তথ্য। সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ নেই। তবে সন্দেহের ভিত্তিতেই গোয়েন্দা বিভাগকে কাজ করতে হয়।’ একারণে, আইএস যে হুমকি প্রদান করেছে তাকে হাল্কাভাবে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কেউই বিষয়টি সহজভাবে নিচ্ছে না।

আইএসের জঙ্গী সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ, সামরিক কর্মকর্তা, বিচারক সবাইকে হুমকি দিয়েছে। পুরো দেশে হামলা করবে এমন দৃঢ়তা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও জনগণকে হুমকি দিয়েছে।
‘২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বরে তালেবানরা টুইন টাওয়ার হামলা করে ধ্বংস করে দিয়েছিল, এবারও সেরকম হামলার চিন্তা করছে আইএস’, বলেন মাইকেল ডাউনিং।

সূত্র: সিএনএন।



মন্তব্য চালু নেই