‘শফিক রেহমানের সঙ্গে সরকার নিষ্ঠুর আচরণ করছে’

বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার নিষ্ঠুর আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা গতকাল বলেছে, ৮১ বছর বয়সী রেহমানকে কয়েক সপ্তাহ ধরে নির্জন কারাবাসে (সলিটারি কনফাইনমেন্ট) রাখা হয়েছে।

প্রাণঘাতী স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত রাখা হয়েছে। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের এ আচরণ নিষ্ঠুরতা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক চম্পা পাটেল বলেছেন, ‘শফিক রেহমানের দীর্ঘায়িত নির্জন কারাবাসের ইতি টানতে হবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে। নিশ্চিত করতে হবে তার সুস্থতা।

এটা মর্মাহত করার মতো যে, ৮২ বছরের একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি যার কিনা হার্টের সমস্যাও রয়েছে- তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার সন্দেহে শফিক রেহমানকে ১৬ই এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়।

তার আইনজীবী ও পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, ২৭শে এপ্রিল থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। সেখানে অন্য বন্দিদের সঙ্গে তাকে কথাবার্তা বলতে দেয়া হয় না। গ্রেপ্তারের পর থেকে তার আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা-সাক্ষাতের সীমিত সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

তিনি ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যাসহ দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুক্তভোগী হওয়ায় চিকিৎসা সেবা ছাড়া তার স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে। তাকে কারাগারে রাখা হলে দীর্ঘমেয়াদে তার সুস্বাস্থ্য নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন তার পরিবার। ১৯শে মে, ডায়াবেটিস সংক্রান্ত কারণে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চেকআপের পর তাকে কাশিমপুর ফেরত পাঠানো হয়। সেখানেই বর্তমানে কারা হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘায়িত নির্জন কারাবাসের ফলে তার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব নিয়েও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সেলে থাকাকালীন লেখালেখি করার জন্য শফিক রেহমান কাগজ ও কলম চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষ তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

ওদিকে, বৃটেনের অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও বৃটেনের দ্বৈত নাগরিক শফিক রেহমানের ছেলে সুমিত বৃটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নর্থ লন্ডনের বাসিন্দা সুমিতের এলাকার এমপি ম্যাথিউ অফোর্ড ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, তিনি এ পরিস্থিতি নিয়ে অবগত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘কঠিন ও সংবেদনশীল একটি পরিবেশে সব ধরনের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ মামলা নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোনো জবাব পায় নি।



মন্তব্য চালু নেই