‘শরীর দিয়েছে ঢেকে রাখার জন্য নয়’

আলোক ধাঁধাঁর এই রঙ্গমঞ্চে আমরা সবাই নিজেকে দেখতে চাই সবার র্শীষে। এর জন্য যা করা দরকার আমরা সাধারণত তাই করার চেষ্টা করি। সেই চেষ্টা যদি ভুল ডিসিশনে হয়, তাহলে কতটাই বা বাহবা পাওয়া যায়।

মিডিয়াতে কাজ করতে হলে কাঠ-খর পোড়াতে হয় সবার। তবে অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা যে, মিডিয়াতে কাজ করলেই খারাপ হতে হয়। কিন্তু সেই ধারণাই এখন বাস্তবে পরিণত করছে তরুণ বা আগ্রহী মডেলরা। তাড়াতাড়ি সেলিব্রেটি হওয়ার তাগিদে বেছে নিচ্ছে খারাপ পথ। যা প্রকাশ পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে।

তাদের একটা ভ্রান্ত ধারণা যে, ফলোয়ার বা লাইক বাড়লেই সেলিব্রেটি হওয়া যায়। যার সূত্র ধরেই তারা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে আপলোট করছে নগ্ন ছবি। অনেকে তো আসছে ফেসবুক লাইভেও। তাদের ফলোয়াররা যা দেখতে চায় তাই দেখাছেন সাদরে। এতে করে নতুন মডেলরা মনে করছেন যে, তারা এক একজন হয়ে উঠেছে বিরাট সেলিব্রেটি।

কিন্তু আদৌ কি তারা সেলিব্রেটি হতে পারছে। বরং এতে করে কুলশিত হচ্ছে আমাদের দেশীয় বাংলা সংস্কৃতি। যা কারোর-ই কাম্য নয়। সেলিব্রেটি হতে হলে কাজ জানতে হয়, শরীর দেখাতে হয় না। এটা হয়ত ভুলেই গেছে নতুন প্রজন্মের মডেলরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকএমনই এক নতুন মডেল জানান, ‘এটা খারাপ কিছু না, আল্লাহ তায়ালা আমাকে একটা সুন্দর শরীর দিয়েছে ঢেকে রাখার জন্য নয়। এর সৌন্দর্য উপভোগ করার অধিকার সবারই আছে।’

অশ্লীল ছবি আপলোড বা লাইভে দেখানোর বিষয় নিয়ে এক দর্শক বলেন, ‘আপনি যদি কিছু দেখান, তহলে আমি কেন দেখব না। তবে এটাকে কোন সংস্কৃতি বলা যাবে না, এসব পাগলামির একটা অংশমাত্র। দেশ রসাতলে যাচ্ছে তারই প্রমাণ এটা।’

এ বিষয়ে বিশিষ্টজনেরা দিয়েছেন বিভিন্ন মতামত।

মামুনুর রশীদ: যারা আসলে এসব কাজ করছে তারা প্রকৃত মানুষ না। যারা আমাদের বাংলা সংস্কৃতিকে কুলশিত করছে এবং নিজেদেরকে শিল্পী বলে দাবি করেছে, তাদেরকে ‘বয়কট’ করা উচিত। কোন সংস্কৃতিই নোংরা হতে পারে না। আর শিল্পী হওয়ার জন্য যোগ্যতা লাগে অন্য কিছু দিয়ে আর যাই হোক শিল্পী হওয়া যায় না। নোংরা ছবি আপলোড বা লাইভে এসে নোংরামী করার বিরুদ্বে আইন হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, সেটা যে সেক্টরেই হোক না কেন। তাহলে হয়তো এসব বন্ধ হবে। আর বাবা-মা তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখবেন যাতে সন্তানরা বিপদে চলে না যায়।

ছটকু আহমেদ: নগ্নতা কখনো কারো জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে না। নগ্নতাপুজি করে তাড়াতাড়ি উপরে উঠলেও তাড়াতাড়ি তলিয়ে যায়। মিডিয়াতে কাজ করতে হলে কাজ শিখে আসতে হবে শরীর দেখিয়ে কোন লাভ হবে না। লাইক, কমেন্ট আর ফলোয়ারে সেলিব্রেটি হওয়া যায় না।

এ বিষয়ে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আসলে যারা এই পথে হাটছেন তারা একরকমের রোগে ভুগছেন। তারা মনে করে যে, তারা যা করছে এটাই ঠিক। মাইন্ডে একটা কমান্ড সেট করার মত, কোন ভাল খারাপ বুঝবে না, যেটা করছে সেটা করেই যাবে। এতে করে মানসিক অসুস্থতায় ভুগে থাকেন সেই সকল মডেলরা। আর এই রোগে ভোগার কারণ হচ্ছে বেশিরভাগ মডেলরাই পরিবারের বাইরে থাকেন, যার কারণে তারা একাকিত্ততায় ভুগে থাকেন। এর প্রতিকার হিসেবে আমি বলতে পারি যে, পরিবারের মানুষেরা যাতে সেই সকল মানুষদের সময় দেন। একমাত্র পরিবারই পারে এই পথ থেকে তাদের সন্তানদের ফিরিয়ে আনতে।

সর্বোপরি ভালো শিল্পী হতে হলে পরিশ্রমকেই প্রাধান্য দিতে হবে সবার । কষ্ট সাধন না করলে সাফল্য পাওয়া যায় না।



মন্তব্য চালু নেই