শাকিবের ওপর অনেক চাপ

শাকিবের অর্জনের ফিরিস্তিতে অসংখ্য ছবি তো আছেই, আছে ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ (২০১০) আর ‘খোদার পরে মা’ (২০১২) ছবির জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয়, অভাবনীয় পারিশ্রমিক নেওয়া, ৬০০টিরও বেশি প্রেক্ষাগৃহে চলা ছবির তারকা, একই ঈদে সর্বাধিক চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়া- অভিনয়ের পনেরো বছরেরও বেশি সময়ে এমন একাধিক রেকর্ড লিখেছেন। ভক্তরা ভালোবেসে নামের আগে ‘কিং খান’, ‘যুবরাজ’, ‘নাম্বার ওয়ান’ বিশেষণগুলো ব্যবহার করেন। কিন্তু তিনি কোনো বিশেষণে বিশ্বাসী নন বলে জানিয়ে রাখলেন।

সারাবছরই অনেক চাপ থাকে শাকিবের ওপর। শুটিং, ডাবিং, শিডিউল বন্টনের ওপর ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু থাকে না। এসব কারণে সব সামলাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। একজন মানুষ আর কতোই বা পারেন! একের পর এক ইনিংসে ব্যাট করলে ব্যাটসম্যানরা ক্লান্ত হন। শাকিবের মধ্যেও টানা কাজের ক্লান্তি আসে। তখন শরীর মহাশয়কে নিয়ে পারেন না। সেজন্য যেতে হয় হাসপাতালেও। কিছুদিন আগেও দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। তবে এখন তিনি ফিট। সবার অতিরিক্ত চাহিদার কারণে ছবিপ্রতি বিশাল পারিশ্রমিক না পারতে চান না। অবশ্য তার বিরুদ্ধে শুটিং স্পটে দেরি করে আসার অভিযোগ শোনা যায়। ‘সম্রাট’-এর বেলায়ও দেখলাম ব্যাপারটা। কিন্তু রাজ জানালেন, দেরি করে এলেও ঠিকই গভীর রাত অবধি কাজ করে দেন শাকিব। এ প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বললেন, ‘আট ঘণ্টার বেশি কাজ করা ঠিক নয়। কিন্তু আমাদের এখানে ১২ ঘণ্টার শিডিউল নেওয়া হয়। এটা পাল্টানো দরকার। আমরাও তো মানুষ। কাজের পরিধি প্রতিদিন আট ঘণ্টার মধ্যে বেঁধে রাখতে পারলে কাজও ভালো হয়।’

অভিনয়ের পাশাপাশি নির্বাচনেও সফল হয়েছেন শাকিব। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি পদের দায়িত্বও আছে। দেশে ভারতীয় ছবি আমদানির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন। তার মতে, ‘ভারতীয় ছবি এলে আমাদের শিল্প বড় ধরনের ধাক্কা খাবে। ছবি আমদানির চেয়ে সিনেমা হলের পরিবেশ উন্নত করা আর সিনেপ্লেক্স বানানোর দিকে জোর দেওয়া উচিত সবার। জেলা শহরের প্রেক্ষাগৃহগুলো মধ্যবিত্ত পরিবারের অনুপযোগী। ভারতীয় ছবি এলেই যে তারা প্রেক্ষাগৃহে যাবেন, এটা ভাবা ভুল হবে। সিনেমা হল উন্নত হলে ও সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়লে দর্শক বাংলা ছবিই দেখবে। দর্শককে প্রেক্ষাগৃহমুখী করাই আমাদের সবার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

শাকিব কী জিনিস, কেমন ধাতুতে বানানো; তা নির্মাতারা জানেন। তার সবচেয়ে বড় গুণ হাল না ছাড়া। তিনি আগাগোড়া হার না-মানা ছেলে। শাকিব আশাবাদী মানুষ। ‘আমি মনে করি, আমাদের ছবির মান ভালো করা প্রয়োজন। সেজন্য দরকার উন্নত কারিগরি-সুবিধা। দেখবেন ধীরে ধীরে আমাদের ছবির অবস্থা বদলাবে। বদলাতেই হবে। আমরাই বদলাবো।’



মন্তব্য চালু নেই