শিকলে বেঁধে স্ত্রীর শরীরে খুন্তির ছ্যাঁকা

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার শরীফাবাদ গ্রামে স্ত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে লোহার গরম রড ও খুন্তি দিয়ে শরীরে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মীর বিরুদ্ধে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে ওই গৃহবধূকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে নির্যাতিতা নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হলেও গৃহবধূর স্বামী দাবি, অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক করে বাবা-মায়ের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। ওই গৃহবধূকে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

নির্যাতি গৃহবধূর নাম তাসলিমা বেগম। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার নির্যাতিতার মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, জেলার উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের যুগীহাটি গ্রামের আজিজ হাওলাদারের মেয়ে তাসলিমা বেগমের সঙ্গে কয়েক বছর আজে গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ গ্রামের ওহাব আলী মৃধার ছেলে বাদল মৃধার বিয়ে হয়।

তাসলিমা বেগম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে বাদল মৃধা এবং তার পরিবারের লোকজন তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারপিট শুরু করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে এবং শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী বাদল ও তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে লোহার গরম রড ও খুনতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়ার পর ক্ষতস্থানে লবন এবং মরিচের গুড়া ছিটিয়ে নির্যাতন করে। এ সময় আমাকে বিষ মেশানো জুস পান করানোর চেষ্টা করে তারা। খেতে না চাইলে তারা আমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।’

নির্যাতিতার মা জাহানারা বেগমের অভিযোগ, বুধবার বিকালে স্থানীয়দের কাছে থেকে খবর পেয়ে আমি ও আমার স্বামী তাসলিমাকে উদ্ধারের জন্য শরিফাবাদ গ্রামে আসলে জামাতা বাদল মৃধা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে আনি।

কিন্তু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তাসলিমার স্বামী বাদল মৃধা বলেন, ‘প্রতিবেশী নুর মৃধার ছেলে আল আমিনের সঙ্গে আমার স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক থাকায় তার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হতো। ঘটনার দিন আল আমিনের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাসলিমাকে আটক করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরে বাবা-মার কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। লোহার গরম রড ও খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।

জানতে চাইলে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কবির বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।



মন্তব্য চালু নেই