শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ অর্থমন্ত্রীর

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই দেবে। এই ভ্যাটের কারণে যেন নতুন করে টিউশন ফি এর নামে বাড়তি অর্থ নিতে না পারে , সে ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

শনিবার দুপুরে বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘বিতর্ক বিকাশ’-এর চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। ব্র্যাক ও এটিএন বাংলার সহযোগিতায় এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যে ফি নেয়, তার পরিমান অনেক বেশি। আমি হিসেব করে দেখেছি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর প্রতিদিন খরচ হয় এক হাজার টাকা। তার ফি, বইয়ের খরচ, লাইব্রেরি ফি, খাওয়া-দাওয়াসহ এই খরচ হয়। আমি সেখান থেকে মাত্র ৭৫ টাকা চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমি বলেছি যে এই সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট, যেটা টিউশন ফি আদায় হচ্ছে সেখান থেকে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়েছে।’

এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমরা যদি নজর না দাও তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফি, ডেভেলপমেন্ট ফান্ড কিংবা অন্য কোনো নামে তোমাদের কাছ থেকে এই অর্থ তুলে নেবে। সে জন্য তোমরা আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নাও, যেন ফি না বাড়ে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ২৭ বছরে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমরা ৬ বছরে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে সে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দাবি দাওয়া মানতে গেলে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় খোঁচা দিতে হয়।’

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘সুদের হার সরকার নির্ধারণ করেন না। এটা ব্যবসায়ীরা নির্ধারণ করে। আমরা তাদের অনুসরণ করি। আমাদের সমস্যা হচ্ছে যারা এখানে বিনিয়োগ করছে তারা ২০ শতাংশের কম লভ্যাংশ আশা করে না। এ মুহুর্তে দেশে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ। তাই কোনোমতে উচ্চ সুদের হার এমহুর্তে যুক্তিযুক্ত নয়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার একটি মাত্র সুদের হার নির্ধারণ করে, সেটা হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। প্রাইভেট সেক্টর সুদের হার কমাতে চাইলে আমি সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দিবো।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভ্যাটের জন্য আন্দোলন করছেন, রাস্তা অবরোধ করছেন। আপনারা যে আন্দোলন করছেন, আমি যদি তার নেতা হতাম তাহলে বলতাম, আমি ভ্যাট দেব। কিন্তু এ জন্য একটি ট্রাস্ট করতে হবে। ট্রাস্টের নাম হবে রিসার্চ ট্রাস্ট ফান্ড। আমি যত পরিমাণ ভ্যাট দেব, সমপরিমাণ টাকা সরকারও ওই ট্রাস্টে দেবে। ওই অর্থ গবেষণায় খরচ হবে। তাহলে অনেক মানসম্পন্ন গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে থেকে আসবে।’

প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা ও পরিচালনা করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, ব্যাক –এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ মুসা প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই