শিশুকে গুলি: সাংসদ লিটনকে গ্রেপ্তার করতে চায় পুলিশ

খেলতে থাকা শিশুকে ডেকে নিয়ে পায়ে গুলি করার অভিযোগের পর থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। কেবল নিজে নন, পরিবারের কোন সদস্যই এখন নেই প্রকাশ্যে। তবে তার অস্ত্র দুটি এক নিকটাত্মীয়কে গিয়ে পাঠিয়েছেন থানায়।

এরই মধ্যে তদন্ত অনেকটাই গুটিয়ে এনেছে পুলিশ। এই ঘটনায় সংসদ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বাহিনীটি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টাও বলছে।

শুক্রবার সকালে ঘটনার পর পরই নিজের ফোন বন্ধ রেখে আড়ালে চলে যান সাংসদ লিটন। বন্ধ আছে তার স্ত্রীর ফোনও। সুন্দরগঞ্জে তার বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি পরিবারের কোন সদস্যকেই। ঢাকায়ও তার বাসভবনে নেই কেউ।

একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গ, শিশুকে গুলি করার মতো অভিযোগ উঠার ঘটনায় এমনিতেই তোলপাড় সারা দেশে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, দলীয় পরিচয়ে পার পাবেন না লিটন। দোষী প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।

শিশু সৌরভের বাবার হত্যা চেষ্টার মামলার পর তদন্তে নেমেছে পুলিশও। এরই মধ্যে সাংসদের দুটি অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেছে প্রশাসন। কিন্তু তার কোন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন জানান, ‘এই ঘটনায় আমরা প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছি। সাংসদকে গ্রেপ্তারের বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছি, কিন্তু তার কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না’।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘একজন আইনপ্রণেতা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন কিন্তু গাইবান্ধায় যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত। ঘটনার পর তার আত্মগোপনে যাওয়া আরও বেশি অগ্রহণযোগ্য। আইনপ্রণেতা হিসেবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত সাংসদ লিটনের। তাকে প্রকাশ্যে এসে বক্তব্যের জবাব দেয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তার প্রতিফলন আমরা দেখতে অপেক্ষা করছি’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘দেশে সে অর্থে আইনের শাসন নেই। যখন যারা ক্ষমতায় থাকে তারা তাদের দলের নেতাদের অপরাধের দায়মুক্তি দিয়ে থাকে। এ কারণে আজকে এ সমস্যা হচ্ছে। অতীতেও কয়েকজন সংসদ সদস্য এমন অপরাধ করেছিলেন। এমনকি সংসদ ভবন এলাকায় সংসদ সদস্যের গাড়ি একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কিন্তু সে অপরাধের কি শাস্তি হয়েছে বা কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমরা এখনো কিছু জানি না’।

তবে ভিন্নমত আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরুর। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এখন পুলিশের তদন্তাধীন। পুলিশ মামলার অভিযোগপত্র দিলেই তাঁর আত্মসমপর্ণের বিষয়টি উঠে আসবে’। ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই