শীর্ষেন্দুর পড়াশোনার খরচ জোগাবে স্কুল

পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস। সে যতদিন এই স্কুলে পড়াশোনা করবে ততদিন তার খরচ জোগাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়েছেন স্কুলের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী।

ওই স্কুল মিলনায়তনে সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক এ ঘোষণা দেন।

পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি লেখে শীর্ষেন্দু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই চিঠির উত্তর দেন ৮ সেপ্টেম্বর।

এছাড়াও জেলা পরিষদ প্রশাসক খান মোশারেফ হোসেন জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ মৃধা ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।

শীর্ষেন্দু তার চিঠিতে লেখে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম ও শুভেচ্ছা নেবেন। আমি দেশের একজন সাধারণ নাগরিক। নাম শীর্ষেন্দু বিশ্বাস, পিতা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, মাতা শীলা রানী সন্নামত। আমি পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। আমার দাদু অবিনাশ সন্নামত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি আপনার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে উপস্থিত ছিলাম। আমি আপনার পিতার শৈশবকাল রচনা লিখে তৃতীয় স্থান অধিকার করি।

আমার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি। আমাদের মির্জাগঞ্জ নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। এটি পটুয়াখালী জেলার একটি উপজেলা। এ নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ। মানুষ ভয় পায়। কখনো নৌকা ডুবে যায়, কখনো ট্রলার ডুবে যায়। এতে আমার থেকে ছোট ভাইবোন তাদের মা-বাবাকে হারায়। আমি আমার মা-বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। তাঁদের হারাতে চাই না। তাই আপনার কাছে একটাই অনুরোধ যে আপনি মির্জাগঞ্জ নদীতে ব্রিজের ব্যবস্থা করুন। তা যদি আপনি পারেন, তাহলে আমাদের জন্য একটু কষ্ট করে এই ব্রিজ তৈরির ব্যবস্থা করুন। আজ আর নয়। ইতি, আপনার দেশের একজন সাধারণ নাগরিক, শীর্ষেন্দু বিশ্বাস।

পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষেন্দুকে একটি চিঠি লেখেন, চিঠিতে তিনি শীর্ষেন্দুকে তার সচেতনতার প্রশংসা জানিয়ে মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রী তার চিঠিতে লেখেন- স্নেহের শীর্ষেন্দু, তুমি শুধু দেশের একজন সাধারণ নাগরিক নও। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়ার অগ্রজ সৈনিক। আমি জানি পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদীটি অত্যন্ত খরস্রোতা। নিজের পিতা-মাতাসহ অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই নদীকেন্দ্রিক তোমার নিরাপত্তাসচেতনতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি বুঝতে পারি তোমার বীর মুক্তিযোদ্ধা দাদুর প্রভাব রয়েছে তোমার ওপর। মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে বলে তোমাকে আশ্বস্ত করছি।

চিঠির জবাবের শেষের দুই লাইনে প্রধানমন্ত্রী শীর্ষেন্দুসহ তার পরিবারের সবার মঙ্গল কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর লিখিত চিঠিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী জুবিলী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে পৌঁছে।



মন্তব্য চালু নেই