শেকৃবির ভর্তি পরীক্ষায় যন্ত্রপাতিসহ আটক ৬

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের কাছে উন্নতমানের ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেছে। আটক ছয়জনের মধ্যে একজনকে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশ আসার আগেই কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাকি পাঁচজনকে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সূত্র মতে, শুক্রবার সকালে শেকৃবিসহ মোট ১০টি কেন্দ্রে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলছিল। এ সময়ে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে মোট ছয়জনকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- মো. জাহিদ হাসান (রোল- ২৪১৯৩), রেবেকা সুলতানা(রোল- ১৫৯৯৮), ইমদাদুল হক মিলন (রোল- ১৫৮৪৪), আপন মিস্ত্রি (রোল- ১৫৯৮২)।

এদের মধ্যে তিনজনকে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। অন্য দুজনকে মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও লালমাটিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়।

এছাড়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক কমল বিশ্বাসকে (রোল- ২৩৪৫৫২) কেন্দ্র থেকেই ছেড়ে দেয়া হয়।

মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ কেন্দ্রের ইনচার্জ প্রফেসর মো. সেকেন্দার আলী ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমার কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলা থেকে আমাকে ফোন দেন পরীক্ষা হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মারজানা ইয়াসমিন। তখন পরীক্ষা মাত্র ৩৫ মিনিট হয়েছে। আমি সেখানে গিয়ে দেখি আটককৃত পরীক্ষার্থী রেবেকা সুলতানার কান এবং জামার ভিতর থেকে মোট দুইটি ডিভাইস পাওয়া যায়, যা কানে দিলে অপর পাশ থেকে অনবরত উত্তর আসছে বোঝা যায়। একইভাবে আরো দুইজনকে আমরা আটক করি।

আটক রেবেকা সুলতানা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভাই আমাকে পরীক্ষার কিছুক্ষণ আগে এসে ডিভাইস দিয়ে গেছে। আমি একা গিয়ে দয়াগঞ্জ থেকে তা নিয়ে আসি। কিন্তু আমি তাদের চিনি না। আমার ভাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

রেবেকার বাবা বলেন, আমার ভাইগনা (সিদ্দিক) ও তার বন্ধুরা আমার মেয়ের সঙ্গে কথা বলে এইসব কিছু ঠিক করেছে। এগুলো সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

সিদ্দিকের পরিচয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, সিদ্দিক চিটাগাং ভার্সিটিতে পড়ালেখা শেষ করেছে।
আটক আরেক শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, প্রদীপ নামে এক বড়ভাই আমাদের উৎপল দত্ত নামে একজনের কাছে নিয়ে যান। তার সেঙ্গ আমাদের ২ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। আমাদের মূল দুটি ট্রান্সক্রিপ্ট তারা জমা রাখে। তিনি বলেন, এটার বিনিময়ে তিনি আমাদের ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর দেবেন বলে জানান।

উৎপলের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, উৎপল ফার্মগেটের পেছনে রাজাবাজার থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি যশোরে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তাদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভ্রাম্যমান আদালত থাকলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তা নেই। তাই আমরা এখন র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে মূল অপরাধীদের খুঁজে বের করবো।

মামলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাপারে আমরা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেব।

মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) একজন আটকের কথা নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের হেফাজতে তাকে রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।



মন্তব্য চালু নেই