শেষ পর্যন্ত জেলেই যেতে হলো সাংসদ আমানুরকে

শেষ পর্যন্ত জেলেই যেতে হলো সাংসদ আমানুর রহমান রানাকে। দীর্ঘ ছয় মাসেরও বেশি সময় পলাতক থাকার পর তিনি আজ রবিবার টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। সকালের দিকে তিনি আদালত প্রঙ্গনে প্রবেশ করেন এবং সকাল নয়টার দিকে তিনি আদালত কক্ষে ঢুকে আত্মসমপর্ণ করে জামিন আবেদন করেন।

মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার এই প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া।

সকাল ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম খান পরে সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পালিয়ে থাকেন। রবিবার সকাল ১০টায় তিনি জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া তাঁর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।

আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল বাকী, ফায়জুর রহমান, খন্দকার ফায়কুজ্জামান নাজিম।

শুনানির সময় পুরো আদালত চত্বর নিরাপত্তায় ঢাকা ছিল। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় আদালতের আশেপাশে। এরপরও উভয় পক্ষের সমর্থকরা ভিড় করে আদালতে আশে পাশে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছে ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। পরে তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। আদালত এপ্রিল মাসে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। অভিযোগপত্রে আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

এমপি আমানুর রহমান খান রানার ভাইয়েরা হলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান (মুক্তি), ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান (বাপ্পা)।

এছাড়া হত্যা মামলার বাকি ১০ আসামির মধ্যে রয়েছে এমপি আমানুর রহমান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, আনিছুল ইসলাম (রাজা), মোহাম্মদ আলী, সমীর ও ফরিদ আহমেদ, দারোয়ান বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন (চান), নাসির উদ্দিন (নুরু), ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মাছুদুর রহমান। এর মধ্যে আলী, সমীর, ফরিদ ও আনিছুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকিরা পলাতক রয়েছে।

পরে বিচারিক হাকিম আদালত এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তাঁর তিন ভাইসহ পলাতক ১০ আসামির বিরুদ্ধে হুলিয়া ও ক্রোক পরোয়ানা জারি করেন। তাঁদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই