শোকের দিনে সঙ্গীত-নৃত্য!

জেল হত্যা দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধায় পুরো জাতি স্মরণ করছে জাতীয় চার নেতাকে। কিন্তু রাজশাহীতে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। যেখানে শিশু একাডেমিতে চলছে নাচ, গান, কবিতা, গল্প আর নৃত্যের আসর।

এ উদ্যোগ কোনো ব্যক্তির নয় খোদ জেলা প্রশাসন ও শিশু একাডেমির। এ বিভাগীয় শহরেই জাতীয় চার নেতার এক জন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের জন্মস্থান।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শিশু একাডেমীতে শুরু হয়ে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলছিল এ অনুষ্ঠান। এ ঘটনায় রাজশাহী সুধী সমাজের মধ্যে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ জাকারিয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়েছে, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুবর্ণ জয়ন্তী ও বাংলা ভাষায় টেলিভিশন সম্প্রচারের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন রাজশাহী এর আয়োজনে ০৩ নভেম্বর, ২০১৪ শিশুদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

শোকের দিনে সঙ্গীত-নৃত্য!অংশ গ্রহণে ইচ্ছুকরা সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় রিভারভিউ স্কুলে উপস্থিত হতে শুরু করে। পরে রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, লালন সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত, আঞ্চলিক সঙ্গীত, পল্লীগীতি, আধুনিক গান এবং দেশাত্মবোধক গানের প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

এছাড়া নৃত্য, দলীয় নৃত্য, আভিনয়, আবৃত্তি এবং গল্প বলা প্রতিযোগিতাও চলছে। জেল হত্যা দিবসে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজনে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এ প্রতিযোগিতা বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছে।

জাতীয় চার নেতার এক নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের স্ত্রী সমাজসেবী শাহীন আক্তার রেনী জানান, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি বিষয়। সারা জাতি যেখানে শোক দিবস পালন করছে সেখানে এ ধরনের একটি কাজ আমাদের জন্য লজ্জার বিষয় ছাড়া আর কিছুই না। তিনি এটার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

শোকের দিনে সঙ্গীত-নৃত্য!রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বাংলামেইলকে জানান, এটা খুব দুঃখের বিষয়। যেখানে জাতীয় চার নেতার এক নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান শুয়ে আছে সেই মাটিতে এমন ঘটনা মেনে নেয়ার মতো নয়।rajshahi-pic-5-news-by-eliasarafat.03.11.14

আয়োজনের বিষয়ে রাজশাহী শিশু একাডেমীর শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন প্রধান জানান, এটির সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ জাকির হোসেন চিঠি দিয়ে তার কাছে ভেন্যু চেয়েছেন। সেজন্য তিনি ভেন্যু দিয়েছেন। প্রাশাসনের লোকজন ভেন্যু চাইলে তো তিনি না করতে পারবেন না।

অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত আছেন- অভিনয়, গল্প, আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিশিষ্ট কবি অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামানিক, ফারুকুর রহমান ফয়সাল, আব্দুল লতিফ, নৃত্য বাদলসহ প্রায় ১৮ জন বিচারক।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের ফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করনে নি।



মন্তব্য চালু নেই