শ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল মালয়েশিয়া

বিদেশি কর্মী নেয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। শুক্রবার দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি এ ঘোষণা দেন। সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে এক বৈঠকের পর আহমেদ জাহিদি সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, সব ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে (জনশক্তি নেয়ার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের তালিকাভুক্ত দেশ) কর্মী নেয়া স্থগিত করা হয়েছে। মালয়েশীয় সংবাদ সংস্থা বারনামা সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কতো শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।’

তিনি জানান, অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। বিদেশি কর্মিদের ওপর দু’ধরনের করারোপের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

উপ-প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি আহমেদ জাহিদ হামিদি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে বিদেশিদের জায়গায় কাজের দায়িত্ব বুঝে নিতে তিনি দেশটির যুব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি তরান্বিত করতে বিদ্যমান জনশক্তিকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন জাহিদ হামিদি।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে তিন বছরে ১৫ লাখ কমী নিতে জিটুজি প্লাস চুক্তি করার একদিন পর কমী নিয়োগ স্থগিত রাখার এ ঘোষণা দিল মালয়েশিয়া।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছেন।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে জিটুজি পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। সে অনুযায়ী শুধু সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছিল।

কিন্তু ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে কাজ করতে আগ্রহীর সংখ্যা কম হওয়ায় ওই উদ্যোগে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। পরে মালয়েশিয়ার জনশক্তির জন্য বাংলাদেশ ‘সোর্স কান্ট্রির’ তালিকায় এলে সেবা, উৎপাদন, নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর বুধবার ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ত জায়েম ওই অনুষ্ঠানে বলেন, ‘পাঁচ বছর মেয়াদী এই চুক্তির ফলে দুই দেশই উপকৃত হবে।’ কিন্তু তার পরদিনই দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী বিদেশি কর্মীর ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা জানালেন।



মন্তব্য চালু নেই