শ্রীমঙ্গলে আনন্দ ভ্রমনে আসা ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের পিটালো বিজিবি

সৌরভ আদিত্য, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে : গতকাল বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়ন থেকে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে কথাকাটির এক পর্যায়ে তাদের মারপিট করে বিজিবি, জানা যায়, বধ্যভূমি একাত্তরে বিজিবি সীমান্ত ফ্রেশ কর্ণারে খাবার দেরীতে পরিবেশন করাকে কেন্দ্র করে তীব্র বাকবিতন্ডার পর সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের পেটালো বিজিবি সদস্যরা।

মারধরের পর বিজিবি সদস্যরা ১৪ জনকে আটক করে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করেছে।

এরা হলো বালাগঞ্জ উপজেলার মকবুলপুর গ্রামের রমেশ চন্দ্র দেবের ছেলে কানন চন্দ্র দেব (২৭), হুশিয়ার পুর গ্রামের মৌজ উল্লার ছেলে হাবিবুর রহমান (২৮) ও একই গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া (২৫), সোনার পুর কাজী আব্দুল মালেকের ছেলে কাজী ইকবাল হোসেন (১৮), বাঙ্গালিয়া গ্রামের আতাউর আলীর ছেলে রুবেল মিয়া (২৫), মজলিশ পুর গ্রামের সিতেশ দেবের ছেলে সৌরভ দেব(২০) একই গ্রামের বীরেশ দেবের ছেলে শিপন দেব (১৮), সোনাপুর গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে আব্দুল আলী (৩৫), চান্দাইল পাড়া গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে মাজহারুল ইসলাম (১৮) একই গ্রামের বাহার মিয়ার ছেলে লায়েক মিয়া (২৫), বাঙ্গালিয়া গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান(২৫) সোনারপুর গ্রামের আউয়ুব আলীর ছেলে রায়হান আলী (১৮), চান্দাইল পাড়া গ্রামের গৌছ মিয়ার ছেলে রেজওয়ান (২৫) ও মজলিশ পুর গ্রামের বীরন্দ্র দাসের ছেলে নির্মল দাস (৪০)।

এদের মধ্যে গুরুতর আাহতবস্থায় হাবিবুর রহমান, মো: আব্দুল আলী, নির্মল দাস, রুবেল মিয়া ও জামাল মিয়া কে শ্রীমঙ্গল থানা থেকে সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফের থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি সদস্যরা।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালের ডা: আহমেদ শিবলী জানান আহতদের হাতে পায়ে পিঠে গাঢ়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

বালাগঞ্জ বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া রাত সাড়ে নয়টায় মুঠোফোনে বলেন,আটককৃতরা সবাই বোয়ালজুড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী তারা আনন্দ ভ্রমণে শ্রীমঙ্গলে এসেছিল। ক্যান্টিনে খাওয়া দাওায়া করে ক্যান্টিনে ঝামেলা হয়েছিল। এটা আমরা বিজিবির সাথে সমাধানের চেষ্টা করছি।

৪৬ বিজিবি মেজর মাহমুদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পেটানো বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ক্যান্টিনে নেতাকর্মীরা খাবার দেরীতে পরিবেশন করায় ঝামেলা করেছিল। এসময় ঘটনাস্থলে টহল পুলিশ থাকায় এসব নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গেছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার বিকেল আনুমানিক ৪টায় শ্রীমঙ্গল বধ্যভূমির ৭১ বিজিবি ক্যান্টিনে খাবার খাওয়া কে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়।

শ্রীমঙ্গল সেক্টরের ৪৬ বিজিবি’র কমান্ডিং অফিসার মেজর আখতার ইকবাল মুঠো ফোনে বলেন, লোকজন আসছে। আইসা আওয়ামীগের বড় নেতা পরিচয় দিয়েছে। সীমান্ত ফ্রেশ কর্ণারে খাবার দিতে দেরী হয়েছে। তাদের সহ্য হয় নাই দেরী আর কি। সেকারণে আমাদের বিজিবির লোকজনের উপর তারা হাত তোলার চেষ্ঠা করেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,বিজিবির লোকজনের উপর হাত তুললে বিজিবি কি বসে থাকবে। তবে তিনি বিজিবি সদস্য কর্তৃক মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

শ্রীমঙ্গল থানার উপ পরিদর্শক মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, সীমান্ত ফ্রেশ কর্ণারে কেনা কাটা নিয়ে ঝামেলা করেছে। বিজিবি জানিয়েছে উশৃঙ্খল যুবকরা বিজিবির ক্যান্টিনে হাতাহাতি করে। এসময় বিজিবি সদস্যরা এদের ১৪ জনকে আটক করে থানায় সোর্পদ করে।

তিনি জানান,বালাগঞ্জ বোয়ালজুড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ১৫০ জন নেতাকর্মী বধ্যভূমি একাত্তরে আনন্দভ্রমণে আসে ।

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, বিজিবি আগত পর্যটকদের আমাদের কাছে সোর্পদ করেছে। এ ঘটনায় এখনো কোনও অভিযোগ পাই নি। বিজিবি থেকে আমাকে জানিয়েছে, বিষয়টি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্ঠা চলছে।



মন্তব্য চালু নেই