সংখ্যালঘুদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, প্রসুতির গর্ভপাত

ফেনী সদর উপজেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে এক নারীর গর্ভপাতসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাত উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা জেলে পাড়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এসময় সংখ্যালঘুদের দোকান ও বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানো হয়।

পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুজায় আতশবাজী ফোটানো নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার মাথিয়ারা জেলেপাড়ার নারী পুরুষদের গালমন্দ করতে থাকে সরকারদলীয় ইকবাল গ্রুপের ক্যাডারেরা। স্থানীয় সংখ্যালঘু নেতারা এ ব্যাপারে ক্ষমা প্রার্থনা করে।

এর পর বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাথিয়ারা গ্রামের সাহাবউদ্দিনের ছেলে ইকবালের নেতৃত্বে ৭-৮জন যুবক জেলেপাড়ায় গিয়ে জহরলাল দাসের উপর হামলা করে।

কিছুক্ষন পর সম্রাট ও ইকবালের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সশস্ত্র যুবক জেলে পাড়ায় ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় হামলাকারীরা প্রতিবন্ধি স্বপন দাসের দোকানে ব্যাপক লুট-পাট ও ভাংচুর চালিয়ে মূল্যবান জিনিস-পত্র নিয়ে যায়।

এ সময় পাড়ার লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা সংখ্যালঘুদের মারধর ও গণহারে লুটপাট ভাংচুর করে। তাদের হাত থেকে আহত রবীন্দ্র দাসকে রক্ষায় তার স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা তুলসি রানী দাস (১৮) এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তার উপর নির্যাতন চালায়। ঘটনাস্থলে তুলসির রক্তপাত শুরু হয় এবং বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মৃত বাচ্চা প্রসব করে।

এছাড়া হামলাকারীদের অস্ত্রের আঘাতে আলোরানী দাস (২৮), জহরলাল দাস (৪৫), শোভারানী দাস (৪৫), বিকাশ (২৪), শুকদেব দাস (১২),পরিমল দাসসহ (৬০) প্রায় ২০ জন আহত হয়। নিরাপত্তাহীন প্রায় অর্ধশত পরিবার বাড়ীঘর ছেড়ে নৌকা করে ছোট ফেনী নদীতে আশ্রয় নেয়।

জেলা পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল হক, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক শুকদেব নাথ তপন, জেলা পুজা পরিষদের সভাপতি রাজীব খগেশ দত্ত, লিটন সাহা, গনেশ ভৈমিক ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেছেন।

এবিষয়ে জহরলাল দাস বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে তুলসি রানী দাশকে আশংকাজনক অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত নবজাতকের ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ফেনী সদর হাসপাতালে তত্বাবধায়ক ডাক্তার ছরোয়ার জাহান জানায়, অধিক রক্তক্ষরনের কারনে গৃহবধু তুলসি এখনও শংক্কামুক্ত নয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজু মেম্বার ঘটনার সত্যতা স্বীকারে বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনা নিয়ে এমন লংক্কাকান্ড দেখে তিনি নিজেও হতাশা গ্রস্থ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে এ বিষয়ে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।যুগান্তর



মন্তব্য চালু নেই