সঠিক সময়ে নির্ভুল পূর্বাভাস পাবেন কৃষকরা

দেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাস ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পের প্রথম দফায় ৪৮৭টি উপজেলায় বসানো হবে আধুনিক যন্ত্র। ফলে শস্য উৎপাদনের আগে আবহাওয়া অধিদফতর থেকে সঠিক সময়ে আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস পাবেন দেশের কৃষকরা। আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বৈশ্বিক জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় রয়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, আকস্মিক বন্যা ও টর্নেডোসহ নানা দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয় এ দেশের জনগণকে।

এছাড়া বাংলাদেশে প্রায় ৭২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলীয় অঞ্চল থাকায় এ এলাকার লাখ লাখ মানুষকে জলোচ্ছ্বাস ও সৃষ্ট জলাবদ্ধতা এবং লবণাক্ততার শিকার হয়ে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

এ অবস্থায় গৃহীত প্রকল্পের আওতায় আবহাওয়া অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় ও শাখা কার্যালয়ে উন্নত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি বসানো হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের মতো বড় দুর্যোগের আগাম খবর পেতে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁসহ বিভিন্ন জায়গায় বসানো হবে সতর্কীকরণ যন্ত্র।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে। সম্প্রতি এ প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২০০ উপজেলায় এসব যন্ত্রপাতি বসানো হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সঠিক সময়ে নির্ভুল পূর্বাভাস দেয়া এবং প্রশমনের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবহাওয়া, পানি ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্যাদি সঠিকভাবে সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও প্রক্ষেপণ করাসহ টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়নে সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন, যা এই প্রকল্পের মাধ্যমে করা সম্ভব হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৯৮০ কোটি টাকা। এতে সহজ শর্তে ৮৮৮ কোটি টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক। আর সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৯২ কোটি টাকা।

প্রকল্পটি তিনটি কম্পোনেন্টের মধ্যে কম্পোনেন্ট-এ বাস্তবায়ন করবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। এ অংশের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং ব্যবহার করে দৈনন্দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস বা তথ্যাদি আরও নির্ভুলভাবে দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই