সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকে বেকায়দায় ওরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রাজধানীর সর্বস্তরের মানুষের অবসর কাটানোর অন্যতম প্রিয় জায়গাও ছিল এটি। কিন্তু সম্প্রতি সে অবস্থা আর নেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সম্প্রতি নানা অপকর্ম আক্রায় পরিণত হয়েছে।

সন্ধ্যা নামলেই এই উদ্যান হয়ে ওঠছে অপরাধের স্বর্গরাজ্য। মাদকদ্রব্য কেনাবেচা থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরণ, খুন খারাবি থেকে শুরু করে সব অপরাধেরই কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এই উদ্যান।

আর এসব ঘটনার অধিকাংশেরই দায় চাপছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর, ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনামও। বিষয়টি অনেকদিন ধরেই মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।এ থেকে রেব হয়ে আসারও পথ খুছছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরই অংশ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে গত কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটগুলো পুলিশের উদ্যোগে বন্ধ করে দিচ্ছিল। আজও যথারীতি সন্ধ্যার পর গেটগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। এর ফলে অনেকেই উদ্যানের ভেতরে আটকা পড়ে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, উদ্যানের সব কয়টি গেট বন্ধ রয়েছে। ভেতরে বেশ কিছু ছেলে-মেয়ে আটকে পড়েছে। তারা বের হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো জায়গা পাচ্ছে না। এটা নিয়ে দীর্ঘ সময় বেশ অস্বস্তির মধ্যে পরে তারা। পরে পুলিশ রমনা কালিমন্দিরের সামনের গেট খুলে দিলে তারা বের হয়। এরপর আবার গেট বন্ধ করে দেয়া হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ‘বেশ কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসাধারণ প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর এই উদ্যানে আর কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’

শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গত ১০/১২ দিন ধরে আমরা এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে আসছিলাম। আমরা এখন সন্ধ্যার পর পরই উদ্যানের গেট বন্ধ করে দিচ্ছি। আর এতে কাজও হচ্ছে। আমরা মনে করছি এই পদক্ষেপের ফলে বেশিরভাগ অপরাধ কমে গেছে।যা আছে তাও খুব শীঘ্রই কমে আসবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে যে অভিযোগ আসে তা নিয়ে নানা ধরণের কথা শুনতে হয়। এটা আমাদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে এমন কিছু অভিযোগ আসে যেগুলো মোটেও ভালো নয়। আমাদের কিছু ছাত্র বহিরাগতদের সাথে নিয়ে সেখানে অপরাধ কর্ম করে। যার মধ্যে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক বিক্রি সবকিছুই রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এমন পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘এই পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। এর নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই।’

গত ১ সেপ্টেম্বর বন্ধুদের নিয়ে ঘোরার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

এর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক ছাত্রকে জিম্মী করে এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এরপরই নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে চলে আসে। ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই